বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ : জনগণ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না : প্রধানমন্ত্রী

608

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫
হাসিনা-সংলাপ-বক্তৃতা
জনগণ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের জনগণ এবং যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে তারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
আজ সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা (এলডিএ)’র মধ্যে শুরু হওয়া সংলাপে সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি এবং আদালতের রায় বাস্তবায়ন করেছি। সুতরাং দেশের জনগণ এবং যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে তারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ক্ষমতায় ফিরে আসা মেনে নেবে না।’
দেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই যাতে দেশের জনগণ পছন্দ অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।’ শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ আরো সমৃদ্ধ ও উন্নত হবে। তাঁর সরকারের সময়ে গত ১০ বছরে স্থানীয় সরকারসহ ৬ হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সব ক’টি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে যে ফলই হয়েছে আমরা তা মেনে নিয়েছি।’
শেখ হাসিনা ২০০১ এর নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নৃশংস নির্যাতন ও নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল এবং ২০০১-২০০৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছিল সেভাবে নির্যাতন করেছে। বিএনপি সরকার তাঁর বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দায়ের করেছিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারও ৫/৬টি মামলা দায়ের করেছিল।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চেয়েছিল এবং তাঁকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু সে সময়ে আমরা জোরালোভাবে বলেছি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণ যাদেরকে চায়, তারা ক্ষমতায় আসবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল। সেই বৈরী অবস্থা সত্ত্বেও ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছি।
তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অগ্রগতির ছবি দেখেন- তবে স্বীকার করবেন যে, আমরা দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরায় জাগিয়ে তোলা এবং এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো কঠিন কাজ করতে সক্ষম হয়েছে। ‘আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করতেও সক্ষম হয়েছি।’
বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের ব্যাপক সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দেশে ৭.৮৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ৫.৪ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এইসব সাফল্যের ফলেই আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের সঙ্গে স্থল, সীমান্ত বিরোধের নিরসণ করেছে। পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমান্ত সমস্যারও সমাধান করেছে এবং তাদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখছে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, অতীতে আওয়ামী লীগ ও এলডিএ রাজপথে একইসঙ্গে আন্দোলন করেছে। ‘দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এই এলডিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’
গণভবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ‘সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুই জোটের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
সংলাপে ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অপরদিকে এলডিএ’র ১৬ সদস্যে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
৮টি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত এলডিএতে রয়েছে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
বাসস/এসএইচ/অনু-এইচএন/জেহক/২২৩৫/বেউ/মহ/-কেএমকে/-এবিএইচ