বাজিস-২ : পিরোজপুর জেলা কারাগারের নির্মাণ কাজ শেষ

158

বাজিস-২
পিরোজপুর-জেলা কারাগার
পিরোজপুর জেলা কারাগারের নির্মাণ কাজ শেষ
পিরোজপুর, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলা কারাগারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গত ১ নভেম্বর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে ৪৫০ জন কয়েদী ধারণ ক্ষমতার এ ভবনটির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে আধুনিক আবাসিক নানা সুবিধা সমৃদ্ধ জেলা কারাগার চালু হল।
পিরোজপুরের উপ-কারাগারটি ১৭৭ জন ধারণ ক্ষমতার ছিল। সেখানে দৈনিক গড়ে প্রায় ৫শ’ জন মানবেতর অবস্থায় বন্দীজীবন যাপন করত সে ক্ষেত্রে ঘটবে অভাবনীয় পরিবর্তন। নতুন জেলা কারাগারের ধারণ ক্ষমতা করা হয়েছে ৪৫০ জনের। এর মধ্যে পুরুষ কয়েদী ৪২০ জন এবং মহিলা কয়েদী ৩০ জন থাকতে পারবে। বন্দীদের জন্য থাকবে দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদি, বিচারধীন কয়েদি ও মহিলা কয়েদিদের জন্য থাকবে আলাদা আলাদা ব্যারাক। থাকবে পুরুষ অসুস্থ বন্দীদের জন্য মেডিকেল সেন্টার, প্রিজনারস সেল, ক্যান্টিনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তিনটি জেলা কারাগারের অবকাঠামোগত নির্মাণ এবং দুইটি জেলা কারাগারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পিরোজপুর জেলা কারাগারের নির্মাণ কাজ শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে। ২০০০ সালে জমি অধিগ্রহণ করে ২০০১ সালে ২৬ মে সে সময়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম পিরোজপুর জেলা কারাগার নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ২০০১ পরবর্তী সরকার এ কারাগারটি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০১১ সালে শেখ হাসিনা সরকার এর গণপূর্ত বিভাগ নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে অতিগুরুত্বের সাথে পিরোজপুর জেলা কারাগার নির্মাণ কাজ শুরু করে।
গণপূর্ত বিভাগের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ^নাথ বনিক জানান, জুলাই ২০১১ সালে অনুমোদিত ৪১ কোটি ৯৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকার সংশোধিত প্রকল্প ব্যয়ে কাজ শুরু করে গত অক্টোবর পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। কাজের মধ্যে রয়েছে সাক্ষাতকার ব্লকসহ জেল অফিস কাম জেলারের বাসভবন, প্রিজনার্স ওয়ার্ক শেড, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ব্যারাক, বিচারধীন পুরুষ কয়েদি ব্যারাক, কিশোর কয়েদি ব্যারাক, সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন মহিলা কায়েদি ব্যারাক, ওয়ার্ডার্স ব্যারাক, পুরুষ মেডিকেল সেন্টার, প্রিজনার্স সেল, স্টাফ কোয়াটার এবং দুইটি কোয়ার্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্টার। এনসিলারী ওয়ার্কসের মধ্যে রয়েছে রান্না ঘর, পর্যবেক্ষন টাওয়ার, স্টোর রুম, লন্ড্রি, ফুয়েল স্টোর, ওপেন বাথ, লেট্রিন, গার্ড রুম, হেয়ারকাটিং ও সেলুটিং ডায়াস। এছাড়া বহিঃ পানি সরবরাহ এবং ওয়েস্ট ওয়াটার ডিসপোজাল কাজের ক্ষেত্রে রয়েছে ভূ-গর্ভস্থ জলাধার, পাম্প হাউজ, আরসিসি ড্রেন, পরীক্ষামূলক গভীর নলকূপ ও পৌর পানির লাইন, চার ইঞ্চি গভীর নলকূপ ও অভ্যন্তরীণ পানির লাইন ইত্যাদি কাজ করা হয়েছে। এছাড়া আরও রয়েছে বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন ভবন, পাম্প মটর ও বহিঃ বৈদ্যুতিক কাজ, অগ্নি নির্বাপক, প্যারিমিটার ওয়াল নির্মাণ ও সীমান প্রাচীর নির্মাণ, সেগ্রিগেশন ওয়াল নির্মাণ, রাস্তা এবং ফুটপাত, ভূমি উন্নয়ন ।
পুরাতন কারাগারটিতে পাকিস্তান আমল থেকে এরশাদ এর আমল পর্যন্ত কয়েক বার আটক থাকা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এ্যাড. এম এ মান্নান জানান বৃটিশ আমলে তৈরি এ কারাগারটিতে বর্তমানে কয়েদীরা মানবেতর জীবন যাপন করত। বর্তমান সরকার একটি চমৎকার ভবন নির্মাণ করায় আমরা খুবই খুশী হয়েছি। পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মতিউর রহমান সরদার জানান, ৭৫ পরবর্তী সময় তাকে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের সমর্থক হওয়ার কারণে এ কারাগারটিতে আটক করে রাখা হয়। সে সময় এ কারাগারটি মানুষ বসবাসের অনুপযোগী ছিল। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ২০০১ সালে এ কারাগারটির নির্মাণ কাজ শুরু করলেও পরবর্তী জামায়াত বিএনপি সরকার প্রতিহিংসার বসবর্তী হয়ে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় কয়েদীরা এতদিন মানবেতর জীবন যাপন করত, যা থেকে প্রধান মন্ত্রীর উদ্বোধনের সাথে সাথে সমাপ্তি ঘটল।
বাসস/সংবাদদাতা/কেইউ/১২২৫/নূসী