ঢাকা, ৪ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন আশা প্রকাশ করেন যে সরকারের বিভিন্ন দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে দেশে দারিদ্র্যের হার বর্তমান ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৫-৭ শতাংশের বেশি কমে আসবে।
তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি দারিদ্র্য নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আজ নগরীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি)-তে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পর্যালোচনা বিষয়ক তিন দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী দেশের দরিদ্র জনগণ যাতে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারে সেজন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘দরিদ্রদের জন্য ভাতার পরিমাণ খুব বেশি নয়, কিন্তু এটি তাদেরকে সমাজে মর্যাদা দেয়।’
তিনি শিক্ষিত বেকার লোকদের সামাজিক বিশৃংখলা থেকে বিরত রাখতে বেকারভাতা চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
মেনন অধিবেশনে ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল কর্মপরিকল্পনা’ উন্মোচন ও তিন দিনব্যাপী সামাজিক নিরাপত্তার মেলার উদ্বোধন করেন।
অধিবেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। এছাড়া, ঢাকায় অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট, বাংলাদেশে ইউএনডিপি’র আবাসিক পরিচালক সুদীপ্ত মুখার্জি, বাংলাদেশে ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জিম ম্যাকঅলপাইন উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব এন এম জিয়াউল আলম কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, সরকার দারিদ্র্য নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কেননা, এটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
তিনি সত্যিকার সুবিধা বঞ্চিতদের ভাতা প্রদানের মাধ্যমে যথাযথভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ আরো দৃশ্যমানভাবে তুলে ধরা।
২০২১ সাল পর্যন্ত আগামী ৫ বছরের জন্য এই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি সংস্কারের অধিকাংশ প্রধান প্রস্তাব বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২১ সালের পরবর্তী ৫ বছর পর্যন্ত সংস্কার উদ্যোগগুলো চলতে থাকবে। এর পর প্রধানত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের ভিত্তিতে একটি জীবনচক্র কেন্দ্রিক সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উত্তরণ ঘটানো হবে। বর্তমান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রস্তুত করা এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থপূর্ণ সমন্বয় ও তদারকি।
জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা মেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী সকল সংস্থা এবং এক্ষেত্রে সক্রিয় নেতৃত্বস্থানীয় এনজিওগুলো অংশ নিচ্ছে।