বাজিস-১০ : পাবনায় আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

120

বাজিস-১০
পাবনরা-আমন
পাবনায় আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
পাবনা, ৪ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : কৃষি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অভিমত এবার আমন মৌসুমে খরা থাকলেও ফলনে বিঘœ ঘটেনি। মাঠ ভরা সোনালী ধানের ক্ষেত এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে। শনিবার মাঠ দিবসে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার হাজীপাড়া গ্রামে বিনা ধান-১৭ কর্তন উপল্েক্ষ মাঠ দিবসে এসব মন্তব্য করেন তারা।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনা ধান-১৭ জাতটি আমন মৌসুমে চাষাবাদের জন্য চাষীদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও লাভজনক হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য এই মাঠ দিবসে কৃষি বিশেষজ্ঞগণ ধানটির বিস্তারিত সুফল তুলে ধরেন।
মাঠ দিবসের আয়োজন করেন ঈশ্বরদীস্থ বিনা কর্তৃপক্ষ এবং আটঘরিয়ার উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পাবনাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আজাহার আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিঃ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম, বিনা ঈশ্বরদী উপকেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মোঃ রোকনুজ্জামান এবং কৃষি তথ্য কর্মকর্তা এ.টি.এম.ফজলুল করিম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা তাদের বক্তব্যে ধানটির বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে বলেন, বিনা-১৭ ধানটি উচ্চ ফলনশীল, হেক্টরে ফলন হয় ৬.৫০ মে.টন, স্বল্প জীবন কাল বিশিষ্ট অর্থাৎ ১১৫-১২০ দিনের মধ্যে ধানটি পাওয়া যায়। ক্ষরা সহিষ্ণু বিধায় পানি কম লাগে, সার কম লাগে ধানটির চাউল চিকন এবং ভাত সুস্বাদু।
বিনা কর্তৃপক্ষ ধানটির প্রচার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে চাষীদের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরছে। পাবনা জেলায় এ মৌসুমে চাষীরা উচ্চফলনশীল বিনা-৭, ব্রি-৪৯, ব্রি-৫১ এবং ব্রি-৫২ আবাদ করছে ব্যাপক হারে। পাবনার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে চাষীর মাঠে আমন ধানের আশাব্যঞ্জক অবস্থা। আটঘরিয়ার বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চাষী আঃ খালেক জানালেন, শুধু মাত্র বীজ উৎপাদনের জন্য তার নিজ তত্ত্বাাবধানে ২৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। তিনি বিনা-১৭ ধান ১৫ বিঘা এবং অন্যান্য উচ্চফলনশীল জাতের ধান ১০ বিঘায় আবাদ করেছেন। ধানের অবস্থা খুবই ভাল, ফলন বিঘায় ২২-২৪ মণ হারে হবে ব’লে তিনি জানান।
চাষী বিপ্লব সেন জানান, তার প্রায় ৮ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল আমন ধানের জাত ব্রি-৭৫ আবাদ করা হয়েছে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অন্যান্য সমস্যা কম বিধায় ফলন ২৫ মণ হারে আশা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আজাহার আলী জানান, জেলায় এ বসর ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিবিড় মাঠ পরিদর্শন, উঠান বৈঠক, দলীয় বৈঠকসহ কৃষকদের সাথে ঘনঘন প্রযুক্তিগত ধারণা আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমন আবাদকে সফল করে তোলার সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। জেলায় কোন দুর্যোগ এবং ধানের উল্লেখযোগ্য রোগ বালাই না থাকায় আশাতীত ফলন আশা করছেন তিনি।
বাসস/সংবাদদাতা/১৮১৩/মরপা