বাজিস-৯ : বগুড়ায় ১২ টির মধ্যে ৭টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছেছে

138

বাজিস-৯
বগুড়া-বিদ্যুত
বগুড়ায় ১২ টির মধ্যে ৭টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছেছে
বগুড়া, ৪ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : সরকারের ১০ বছর মেয়াদে বিদ্যুতের সক্ষমতা বিগত ৩০ বছরের তুলনায় বেড়েছে দ্বিগুনের বেশি। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপলাই কোম্পানি লিঃ (নেসকো) জেলার শহর ও শহরতলীতে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জেলার ১২ টির মধ্যে ৭টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের গত দুই বছরের মেয়াদে (১০ বছরে) বগুড়ায় বিদ্যুৎ গ্রহণের সক্ষমতা, বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী, গ্রাহক সংখ্যা, বিতরণ লাইন যেমন বহুগুণে বেড়েছে, তেমনি কমেছে সিস্টেমলসের পরিমাণ।
২০০৯ সালের আগে ৩০ বছর আগে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে দূরের কথা শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ ছিল দুষ্পাপ্য। অসহনীয় লোড শেডিং-এ মানুষ ছিল নাকাল। এখন বিদ্যুৎ আর দুষ্প্রাপ্য নয়। বগুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখন বাড়িতে বাড়িতে জ¦লছে বৈদ্যুতিক বাতি। গ্রামে ব্যবহৃত হচ্ছে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি। শিল্প নগরী বগুড়ার চিত্র পাল্টে গেছে। লোড শেডিং এর জন্য কারখানা গুলোকে বসে থাকতে হয় না। সারা দেশের মধ্যে বগুড়ায় বিদ্যুতায়িত অঞ্চলের পরিমাণ বেশি।
বগুড়া শহর এবং শহরতলীতে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপলাই কোম্পানি লিঃ (নেসকো) বগুড়া -৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম চৌধুরী জানান, তাদের অধীনে বগুড়া শহর ও শহরতলীতে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। আবেদনের ৭ দিনের মধ্যে আবাসিক ও শিল্পকাখানায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সক্ষম। যদি কোন অভিযোগ থাকে সেক্ষেত্রে সংযোগ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। তাদের দপ্তরের সংযোগের জন্য কোন ফাইল আটকে নাই।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেলার ৬ টি উপজেলার মধ্যে ৫ টি উপজেলা নন্দীগ্রাম, বগুড়া সদর কাহালু, দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘিতে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে এমনটাই জানালেন সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী আব্দুল মতিন। মাত্র একটি উপজেলা শিবগঞ্জে ৫ শতাংশ কাজ বাকি আছে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার মধ্যে দিয়ে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর অধিনে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় ১৯৭৮ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল ৯৮ হাজার ৪৫৮ টি। আর ২০০৯ সাল থেকে মাত্র ১০ বছরে গ্রাহক সংখ্যা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৯ টি। ২০০৮ সালের আগে ৩০ বছরে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী ছিল ৪০ শতাংশ। আর ১০ বছরে সুবিধা ভোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৫২ শতাংশ। মোট সুবিধা ভোগী ৯২ শতাংশ।
সমিতি-১ এর বিদ্যুৎ গ্রহনের মোট সক্ষমতা ১০৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে গত ৩০ বছরে হয়েছিল ৫০ মেগাওয়াট। আর বর্তমান সরকারের ১০ বছরে বিদ্যুৎ গ্রহণের মোট সক্ষমতা হয়েছে ৫৪ মেগাওয়াট। ৩০ বছর আগে সিস্টেম লস ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ । ১০ বছরে হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ জেনারেল ম্যানেজার মোঃ খালেকুজ্জামান জানান, পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর অধীনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -২ এর অধিনে ৬ টি উপজেলার মধ্যে সোনাতলা ও শাজাহানপুর উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর পশ্চিমপড়ে শতভাগ বিদুতায়ন সম্ভব হয়েছে। পূর্ব পাড়ের অংশে জামালপুর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। সারিয়াকান্দির পূর্বপাড় থেকে জামালপুর পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া শেষ হবে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ।
এছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ-২ এর অধীনে শেরপুর উপজেলার কিছু অংশে বাকি আছে। তাও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া শেরপুর, গাবতলী উপজেলার কাজও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ হবে। শুধুৃ নন্দীগ্রাম উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ আগামী বছরের মার্চে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে।
৩০ বছর আগে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪৯০ জন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য শুধু গত ১০ বছরে গ্রাহক হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮১ জন। বিদ্যুৎ গ্রহণের সক্ষমতা ছিল ২৩ মেগাওয়াট। ১০ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ মেগাওাট৩০ বছর আগে লাইন বিতরন হয়েছিল ২০৯১ কিলোমিটার। বর্তমান সরকারের ১০ বছরের মেয়াদে হয়েছে ২৯৫১ কিলোমিটার।
বাসস/সংবাদদাতা/১৮১০/মরপা