বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ : জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ড ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা : প্রধানমন্ত্রী

361

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১
শেখ হাসিনা-জেল হত্যাকান্ড
জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ড ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ড ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা।
তিনি বলেন, এ ঘৃণ্য হত্যাকা-ের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, দেশবিরোধী চক্র বাংলার মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। জনগণকে দেওয়া ওয়াদা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য পরিচালনা করছি, বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে।”
শেখ হাসিনা আগামীকাল ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে একথা বলেন। তিনি জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, “মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর একটি কলঙ্কিত দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে এ ধরনের বর্বর হত্যাকা- পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।
পঁচাত্তরের সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদদাতারা পরবর্তী ২১ বছর ধরে দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শাসকগোষ্ঠী কখনও সামরিক লেবাসে, কখনও গণতন্ত্রের মুখোশ পরে, অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা ধরে রাখে। আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার বদলে পুরস্কৃত করে। হত্যাকারীদের তাদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। খুনিদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি সবসময়ই দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে পরাজিত করতে বার বার হামলা চালিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।
আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘সম্প্রতি আদালত ভয়াবহ ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে। আমরা দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র-বিরোধী যে কোনো অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারা সমুন্নত রাখবেন।
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপূর্ণ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবেন।
বাসস/তবি/কেসি/১৮৫০/-আসচৌ