নওগাঁয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন

217

নওগাঁ, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১ হাজার ৯৫ কোটি ৫২ লাখ ব্যয়ে মোট ১৬টি প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়িত হওয়ায় জেলায় অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন, উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন, স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা প্রদান খাবার পানির চাহিদা পুরন সম্ভব হয়েছে। গত ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ কার্যক্রম সম্পাদিত হয়েছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নওগাঁ-১ জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শমসের আলী জানিয়েছেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করার কারণে এ এলাকার পরিবেশ উন্নয়নসহ কৃষি এবং কৃষকদের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে বর্তমান সরকারের বিগত ১০ বছরের সম্পাদিত উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবরণ হচ্ছে জেলায় এ সময়ে ৯২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬১৯টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
আত্রাই নীতে নওগাঁ জেলার অভ্যন্তরে মোট ১৫৬টি এল এল পি স্থাপন করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
জেলায় ভু-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মান করা হয়েছে ২ হাজার ১শ ৯৮টি। এতে মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১৭৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
মোট ৪ হাজার ২শ ৫৮টি সেচযন্ত্রে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
জেলার গভীর নলকূপ এবং এল এল পি সমূহে বিদ্যুতায়িত করার লক্ষ্যে ১ হাজার ২শ ৫৬ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা।
সেচ কাজে ব্যবহৃত গভীর নলকূপ থেকে পানি সরবরাহের স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে মোট ৩শ ৮৩টি। এতে মোট অর্থ ব্যয় হয়েছে ৪৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
জেলায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ১ হাজার ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৩ শ ১ কোটি ২ লাখ টাকা।
এসব পুনঃখননকৃত খালে পানি ধারণের মাধ্যমে সেচ কাজে সব্যবহারের জন্য ৩শ ৭৮টি ক্রসড্যাম নির্মাণে আর্থিক ব্যয় হয়েছে মোট ১শ ৭১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
পানি দুষ্প্রাপ্য এলাকায় খাবার পানি সরবরাহ ও ক্ষুদ্র সেচের জন্য পাতকুয়া স্থাপন করা হয়েছে ২শ ২৭টি। এতে কর্তৃপক্ষে মোট ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
গৃহস্থালী কাজে ব্যব্হার ও ক্ষুদ্র সেচকাজে ব্যবহারের জন্য ৪শ ৪৬টি পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
কৃষি পণ্য বাজারজাত করনে গ্রামীণ যোগাযোগ উন্নয়নের জন্য ২০১ দশমিক ৫১৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ১২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
বন্যাসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পাকা সড়ক মেরামত করা হয়েছে ২১৫ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার। এতে মোট আর্থিক খরচ হয়েছে ৩২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ২৭ লক্ষ ৩১ হাজার ৬শটি ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা রোপন করা হয়েছে যাতে মোট ব্যয় হয়েছে ২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং বজ্রপাত প্রতিরোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ১০ লক্ষ ৭৬ হাজার ১শ ৪৪টি তালগাছের বীজ বপন করা হয়েছে যাতে মোট আর্থিক খরচ হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে মোট ৭২টি ব্রিজ ও কার্লভাট নির্মাণ করা হয়েছে যাতে মোট আর্থিক খরচ হয়েছে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে অগ্রসরমান গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ও কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১৬ হাজার ৫শ ৫০টি। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, খাল ও পুকুর পুনঃখনন করার ফলে বছরে প্রায় ২ লক্ষ মেট্রিকটন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন, ভু-গর্ভস্থ পাইপ লাইন নির্মাণের ফলে কৃষি জমির সাশ্রয়সহ বছরে প্রায় আরও ৩ লক্ষ মেট্রিকটন অতিরিক্ত খাদ্যশষ্য উৎপাদন, ১ লক্ষ মেট্রিকটন উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন, এলএলপি স্থাপন করে ভু-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করার ফলে ৩০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন, ফসলে স্বল্প খরচে সেচপ্রদান ২০ লক্ষ মানুষের খাবার পানির চাহিদা পুরন করা সম্ভব হয়েছে।