বাজিস-৩ : ভোলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সোয়া লাখ মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন

186

বাজিস-৩
ভোলা-সামাজিক-কর্মসূচি
ভোলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সোয়া লাখ মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন
॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ২২ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে সোয়া লাখ অসহায় মানুষের জীবন মানের উন্নতি হয়েছে। গত সাড়ে ৯ বছরে সামাজিকভাবে নিরুপায় নারী-পুরুষদের মাঝে সরকার ৪৮ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ্ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি, হিজরা জনগোষ্ঠীর শিক্ষা উপবৃত্তির মাধ্যমে অসহায় ও দূস্থ মানুষজন এখন নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করছেন। ভাতার টাকায় বিভিন্ন প্রয়োজন মিটিয়ে বর্তমান সরকারের আমলে ভালো আছে পিছয়ে পড়া বিশাল এ জনগোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রীর ভাতায় সামাজিকভাবে তাদের জীবন মানের এসেছে আমূল পরিবর্তন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ভোলায় গত সাড়ে ৯বছরে ব্যাপক কাজ করেছে। এর মধ্যে ২০০৯ সালের পূর্বে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা যেখানে ছিলো ২৯ হাজার ২৪০ জন, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৬ হাজার ২৩৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এদের মাঝে বয়স্ক ভাতা বিতরণ করা হয় ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা ১৪ হাজার ১১৮ জন থেকে ১৯ হাজার ৭৯১ জনে করা হয়েছে। বিধবা ভাতা দেয়া হয়েছে ১১ কোটি ৮৭লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
একইসাথে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হয়েছে ৭ কোটি ৪২ লাখ ১০ হাজার টাকার। ২৭’শ ৭০ জন থেকে ১০ হাজার ৩০৭ জন হয়েছে বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী সংখ্যা। এছাড়া ৫৫৪ জন বেদে ও অনগ্রসর জীবন গোষ্ঠীকে বিশেষ ভাতা হিসাবে ৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ৪৪৭ জনকে প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি বাবদ ৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। হিজরা জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষা উপবৃত্তি ৫৫ জনকে ২ লাখ ৬১ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। বেসরকারি এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট ৪৮৫ জনকে ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: নজরুল ইসলাম আজ বাসস’কে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর একটা সফল উদ্যোগ। পশ্চাদপদ মানুষের কল্যাণে প্রচুর কাজ করছে এ কর্মসূচি। নির্ধারিত ব্যাংক থেকে উপকারভোগীর এ্যাকাউন্টে টাকা জমে যায়। এছাড়া চলতি অর্থবছর থেকে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
শহরের ২ নং ওয়র্ডের গাজীপুর সড়কের বাসিন্দা আব্দুল ওহাব মিয়া (৭০)। ছেলের সংসারে থাকেন। ভাতার টাকায় নিয়মিত ওষুধ কিনে খান। এখন তিনি অনেক ভালো আছেন। তিনি জানান, বৃদ্ধ বয়সে টাকা থাকলে অনেকেই সম্মান করে। ধনীয়া ইউনিয়নের বিধবা রিজায়া বেগম, পারুল বেগম ও সুলতানা আরা বলেন, স্বামী মারা যাবার পর অনেক কষ্ট হয়েছে তাদের। কি›তু এখন ভাতার টাকায় সংসারে অনেক কাজ দেয়। এখন আর তারা নিজেদের অসহায় ভাবেননা। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তারা।
স্থানীয় প্রবীন সংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হাবিবুর রহমান মনে করেন, প্রতিবন্ধীসহ সকল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এখন আর পিছিয়ে পড়া নেই। সমাজের বিশাল অংশকে বাদ দিয়ে সামগ্রীকভাবে উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এ উদ্যোগে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির সুবিধা ভোগ করছে তারা। ফলে সামাজিক মূল ধারায় তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাসস/এইচ এ এম/কেইউ/১১৫৭/নূসী