বাসস দেশ-২৩ : মিরসরাই শেখ মুজিব শিল্প নগরে সমুদ্র বন্দর হবে

166

বাসস দেশ-২৩
চুক্তি-সই-বেজা
মিরসরাই শেখ মুজিব শিল্প নগরে সমুদ্র বন্দর হবে
ঢাকা, ২১ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : জাপান ভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম বৃহদাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সজিত কর্পোরেশন, বাংলাদেশের এনার্জিপ্যাক এবং জাপান ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট কনসোর্টিয়াম এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) মধ্যে গতকাল ঢাকায় সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
সমঝোতা স্মারকের মূল উদ্দেশ্য হল-বেজা বাস্তবায়নাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে (মিরসরাই, ফেনী এবং সীতাকুন্ড) একটি সমুদ্র বন্দর স্থাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রস্তাবিত বন্দর স্থাপন হলে অবকাঠামো উন্নত হবে এবং এ অঞ্চলের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রাথমিক প্রস্তাবের শর্ত অনুযায়ী ৪০ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজের জন্য বাণিজ্যিক বন্দর (বার্থিং) সুবিধা ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উন্নত করা হবে।
বেজার পক্ষে নির্বাহী সদস্য মো. হারুনুর রশীদ এবং সজিত কর্পোরেশন,বাংলাদেশের এনার্জিপ্যাক এবং জাপান ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট কনসোর্টিয়ামের পক্ষে সজিত কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা কেন কুরিবায়েশি সমঝোতায় স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করে ৪০ মাসের মধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হবে।প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে। বাণিজ্যিক জেটি এবং শিল্প পার্কের কাজ শেষ হলে এক লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।শিল্প পার্ক ও জেটি উন্নয়নের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারী মালামাল আমদানির গতিশীলতা সহজতর করা যা চট্টগ্রাম বন্দরে মাল খালাসে দীর্ঘসময়ের সংকটকে কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
শিল্প পার্ক এবং জেটি স্থাপনের ফলে এলপিজি, এলএনজি এবং এইচএফও স্টোরেজ সুবিধার পথ সুগম হবে। সজিত কর্পোরেশন, বাংলাদেশের এনার্জিপ্যাক এবং জাপান ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট আশা করছে, বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে এই বন্দরের কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে।
বেজা চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার একর জমির উপর একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে যার নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’। শিল্প নগরটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হতে ১০ কিলোমিটার ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই চুক্তি সইয়ের মধ্যে দিয়ে বিনিয়োগের নতুন একটি ক্ষেত্র উন্মোচিত হল। তিনি বলেন,এতে প্রমানিত হয় বেজার হাত ধরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ-বান্ধব সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে এবং বিশ্বের কাছে উন্নয়নের একটি রোল মডেল স্থাপন করেছে।
তিনি জানান,মিরসরাইতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর নির্মিত হচ্ছে এবং এর ফলে এদেশে শিল্পায়নের অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ পূরণ হবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, সমুদ্র বন্দর সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে মাল খালাস ও উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো.আমিনুল ইসলাম,নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ,ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরয়াসু ইজুমি, জাইকা প্রতিনিধি হিতোশি হিরাতা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সজিত কর্পোরেশন জাপানে এবং বিশ্বব্যাপী ক্রয়. আমদানি, রপ্তানী বাণিজ্য, বৃহৎ ও ভারি পণ্য উৎপাদন, সেবা প্রদান এবং প্রকল্প সমন্বয় ও পরিকল্পনার সাথে সংযুক্ত রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন বৃহদাকার খাতে বিনিয়োগ এবং অর্থায়ন কার্যক্রমও প্রতিষ্ঠানটি করে থাকে। এসব খাতের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল- অটোমোবাইল,বিদ্যুৎ,খনিজ সম্পদ,রাসায়নিক দ্রব্য,খাদ্যদ্রব্য,কৃষি ও বন সম্পদ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক।
বাংলাদেশের এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরে অটোমোবাইল ব্যবসা, বাণিজ্যিক মোটরযান ও কৃষি খাতের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ আমদানী,বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ, সরবরাহ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জেনারেটর আমদানী, স্পেয়ার পার্টস আমদানী ইত্যাদি শিল্পের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে কাজ করে চলেছে।
জাপান ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট জাপান ভিত্তিক একটি শীর্ষ কনসাল্টিং প্রতিষ্ঠান যেটি বিভিন্ন দেশে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য পরামর্শ প্রদান করে থাকে।
বাসস/আরআই/১৯২৩/এইচএন