বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : তরুণদের কাছে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

151

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) (শেষ প্যারায় সংশোধনীসহ)
শেখ হাসিনা-মিনি স্টেডিয়াম
তরুণদের কাছে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই জনগণের ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে তখনই খেলাধূলাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার একেবারে তৃণমূলের স্কুল পর্যায় থেকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে খেলোয়াড়দের বের করে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
সেই সাথে স্থানীয় এবং একেবারে দেশজ খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায় তাঁরও উদ্যোগ গ্রহণ করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধূলা এবং শরীরচর্চায় আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে আমরা উৎসাহিত করছি।
তিনি বলেন, যতবেশি খেলাধূলা এবং সাংস্কৃতি চর্চায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের আমরা সম্পৃক্ত করতে পারবো ততবেশি তাদের চরিত্র অনমনীয়, দৃঢ় হবে। তাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে এবং মাদক, জঙ্গি- এ ধরনের কোন বিপথে যাবে না।
তাঁর সরকারের সময় ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, দাবাসহ বিভিন্ন খেলায় বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সার্ক অনুর্ধ্ব ১৫ এবং ১৮ ফুটবলে বাংলাদেশের নারীরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল ওয়ান ডে স্ট্যাটাস অর্জন করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন’স ট্রফিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, ইসলামিক সলিডারিটি গেম-২০১৭-তে শুটিং এর মিশ্র দ্বৈতে স্বর্ণ পদক এবং ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রৌপ্য পদক লাভ করে, আর্চারিতে ২০১৭-তে ৬টি স্বর্ণ পদক এবং প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীরাও সাফল্য লাভ করে।
তাঁর সরকারের সময়ে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ওয়ার্ল্ড টি টোয়েন্টি ক্রিকেট, বঙ্গবন্ধু সার্ক ফুটবল, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল, সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন শীপ, পুরুষ এশিয়া কাপ হকি ২০১৭সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানেও বাংলাদেশের সাফল্যের উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ছেলে-মেয়ে এবং প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশে সবরকমের সুযোগ সৃষ্টিতে সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকার চায় তরুণ প্রজন্ম যেন এই খেলাধূলার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে।
জাতীয় ক্রীড়ানীতির খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার ৬ এপ্রিলকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-কে সরকার বিভাগীয় পর্যায়েও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, খেলাধূলা মানোন্নয়নে প্রাকৃতিক বৈচিত্র তুলে ধরে এবং পরিবেশকে রক্ষা করে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ভেন্যু এবং বিভিন্ন স্টেডিয়াম তৈরি করায় তাঁর সরকার সচেষ্ট রয়েছে।
দেশের ৬টি শারিরীক শিক্ষা কলেজে ‘বিপিএড’ ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিজেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাঁর সরকার যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। যেখান থেকে যুবকরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং নিজের পরিবার ও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সমর্থ হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের ৬৪ জেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করায় সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণ-যুব সমাজ নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই করে নিতে পারবে।
দেশের যুব সমাজকে আগামীর ভবিষ্যত আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই তরুণ-যুবকদেরকে আমরা একটা দক্ষ প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি এ সময় তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কর্মসংস্থান ব্যাংক সৃষ্টি এবং এসব ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা প্রদানের তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘তাঁদের বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করার জন্যই আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
‘কাজেই আমাদের আর কারো বেকার থাকার কোন সুযোগ নাই, একটু যদি কেউ উদ্যোগ নেয় তাহলেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। কেননা তারুণ্যইতো মেধা মনন বিকাশের সময় এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তরুণদেরই কাজ,’ যোগ করেন তিনি।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখাটা জরুরি উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ এবং এই গতিধারাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে কারণ জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন এবং আমাদের দেশকে আমাদেরই এখন এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করবো আর ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ। আর ২০৪১ সালে হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ।
তিনি বলেন, আজকের যারা শিশু-কিশোর এবং তরুণ তাঁদের ভবিষ্যতটা যেন আরো বেশি সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়, সফল হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তাঁর সরকার শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা প্লান-২১০০’ গ্রহণ করেছে।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৭৪৫/আরজি