বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যতের জন্য নিজের বর্তমানকে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী

153

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-মোবাইল অপারেটর-ভাষণ
তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যতের জন্য নিজের বর্তমানকে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী

সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার তাঁর সরকারের উদ্যোগের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার পাঁচ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছে। এতে সারাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিসের আওতায় এসেছে। এখন তাঁর সরকার সাবমেরিন ক্যাবলের তৃতীয় সংযোগ গ্রহণেরও চিন্তা-ভাবনা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্রড ব্র্যান্ড সার্ভিসটা একেবারে উপজেলা ও গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। প্রতিটি গ্রামকে আমরা শহরে উন্নীত করছি।’
‘অথচ বিএনপি সরকারের সময়ে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হবার সুযোগ তারা নষ্ট করেছিল দেশের তথ্য পাচার হয়ে যাবার কথা বলে,’ অভিযোগ করেন তিনি।
তাঁর সরকারের প্রতিষ্ঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশে ই-ফাইলিং সুবিধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বাইরে (বিদেশে) গেলেই এখান থেকে সোজা ফাইল চলে যায়। সেখানে বসে কাজ করি। একটা কর্মঘণ্টাও আমার নষ্ট হয় না। এটা হলো বাস্তবতা এবং এখন আমরা ফাইভ-জি’র দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রযুক্তি যে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে এটা আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজে লাগছে, কাজে লাগবে।
‘মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি’ (এমএনপি) সেবা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। একটা সিম থেকে যেকোনো অপারেটরে আরেকটা সিমে নাম্বার পরিবর্তন করা বা একটা অপারেটর থেকে আরেকটা অপারেটরে যাওয়ার যে আধুনিক প্রযুক্তি যা পৃথিবীর খুব সীমিত দেশ ব্যবহার করে, আমরা সেই যুগে প্রবেশ করছি।
তিনি বলেন, ‘যদিও এটা একটা জটিল বিষয়, সেটাকে আজকে সহজভাবে করে দেওয়া হয়েছে। এই এমএনপি সেবা অনেকের জন্য সুবিধা হবে।’
বেসরকারি খাততে সরকার উৎসাহিত করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মোবাইল ফোন বেসরকারি খাতে দিয়েছিলাম বলেই আজ মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন। তাঁর সরকার ৪৪টি টেলিভিশনের লাইসেন্স দিয়েছে।’
তবে, এতগুলো টেলিভিশন লাইসেন্স দেয়ায় ভুক্তভোগী তাঁরাই। কারণ এর মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করা হয়। অবশ্য এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানও হচ্ছে বলেন তিনি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কোথায় ছিলাম, আর এখন কোথায় এসেছি। মাত্র ১০ বছরে এই পরিবর্তন হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে বলে। আর তরুণ প্রজন্ম ভোট দিয়েছে বলে।’
তাঁর সরকার প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২৮টি হাইটেক পার্ক করার পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। ইতোমধ্যে দুটি হয়েছে। ৩৫৫ একর জমির ওপর গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ আসবে। আমরা ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানি করতে পারব। তরুণদের কর্মসংস্থানের আর অভাব হবে না।’
ইউরোপ থেকে ৫/৬ ঘন্টা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০/১২ ঘন্টা সময় এগিয়ে থাকার ভৌগলিক সুযোগ নিয়ে দেশের তরুণরা ঘরে বসেই আউট সোর্সিয়ের মাধ্যমে অনেক টাকা রোজগার যাতে করতে পারে তার সুযোগ সরকার সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা এই সময়ের ব্যবধানকে কাজে লাগিয়ে অর্থ রোজগার করতে পারছে। বাংলাদেশের তরুণরা লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং এর মাধ্যমে সারাবিশ্বে কাজ করতে পারছে। একটি অ্যাপসে নয়টি ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে আমাদের তরুণরা অন্ধকার থেকে আলোর পথে এসেছে।’
এসময় তরুণদের মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা এবং প্রযুক্তির আপডেট জ্ঞান লাভ করার প্রতি তাগিদ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় কম্পিউটার যন্ত্রাংশসহ অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তি সামগ্রীর ওপর শুল্ক হ্রাসে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে দেশের উন্নয়নে কিছু ট্যাক্স প্রদান জরুরী বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ট্যাক্স দিতে হবে। তাহলেই উন্নয়নটা ত্বরান্বিত হবে। কথায় কথায় ট্যাক্স কমানোর দাবি করলে উন্নয়ন হবে কীভাবে! ’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ট্যাক্স দিচ্ছেন বলেই বাজেট সাত গুণ বৃদ্ধি করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কথা বাইরের কাছে হাত পাততে হচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য সম্মানের। সেই সম্মানটা ধরে রাখতে চাই। আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৪৫০/এমএবি