দলছুট ব্যক্তিদের ঐক্য যত দফাই হোক কাজ হবে না : তোফায়েল

751

ঢাকা, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দলছুট ব্যক্তিদের ঐক্য যত দফাই হোক তাতে কাজ হবে না। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য তারা ঐক্য করেছেন, অনেক দাবি-দাওয়া করছেন, এতে লাভ হবে না।
আজ ঢাকায় বিশ^ খাদ্য দিবস-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী খাদ্য মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘কর্ম গড়ে ভবিষ্যত, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ^’ শীর্ষক সেমিনারেরও আয়োজন করা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সংবিধান মোতাবেক আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দেশের সকল দলের অংশগ্রহণে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, খুনিদের দলের সাথে যারা ঐক্য করে, তারা দেশের উন্নতি করতে পারে না। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের উন্নতি হয়, তা আজ প্রমাণিত। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষ নির্বাচিত করলে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যাবেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন। স্বাধীনতার পর দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন হতো ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। আজ দেশের মানুষ ১৬ কোটির বেশি, বসতবাড়ি ও শিল্প কলকারখানা নির্মাণে জমির পরিমাণ কমেছে। তারপরও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় এখন খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে ৪ কোটি টনের বেশি। বাংলাদেশ এখন খাদ্য রপ্তানিকারক দেশের তালিকায়। বাংলাদেশ এখন কৃষি পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করছে। এ জন্য সরকার রপ্তানিতে ২০ ভাগ হারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। দিন দিন রপ্তানি বেড়েই চলছে। গত তিন মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯৭.৩১ ভাগ। বর্তমানে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে বিশে^র মধ্যে চতুর্থ, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে অষ্টম এবং আম উৎপাদনে সপ্তম স্থান অধিকার করে আছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ৩১. ৫ ভাগ, এখন তা নেমে এসেছে ২৪.৩ ভাগে। দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলার। গত বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৮৬ ভাগ।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, কৃষি প্রধান বাংলাদেশে এখনো ৪১ ভাগ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষিজমির সঠিক ব্যবহার, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং সরকারের বিশেষ সহযোগিতায় দেশের কৃষির উৎপাদন বেড়েই চলছে। খাদ্যের জন্য যাতে আর কখনই বিদেশের কাছে হাত পাততে না হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সঠিকভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে কৃষিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছিল। টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। অপ্রতিরোধ্য যাত্রায় এখন বাংলাদেশ।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবদ্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। এসময় বক্তব্য রাখেন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন এবং ঢাকা পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামূল হক।