বাজিস-১ : নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী মৌসুমে প্রচুর ইলিশের দেখা পাওয়ার আশা জেলে-ব্যবসায়ীদের

190

বাজিস-১
বরগুনা-নিষেধাজ্ঞা-ইলিশ
নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী মৌসুমে প্রচুর ইলিশের দেখা পাওয়ার আশা জেলে-ব্যবসায়ীদের
বরগুনা, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : দেশের সুন্দরবন থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত উপকূলের প্রজণন ক্ষেত্রগুলোতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষা বাহিনী টহল দিচ্ছে। মাছ ধরা ট্রলারগুলোর ইলিশ শিকারে সাগরে যাওয়ার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। কোনো ট্রলারই সাগরে যেতে পারছে না। নদীতে জাল ফেলাও বন্ধ। গত ৭ অক্টোবর থেকে আরোপ হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা ২২ অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
উপকূলের নদ-নদীতে মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে এবং প্রতিদিনই চলছে অভিযান। জানিয়েছেন, বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট নুরুল আমিন। প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকারে এ রকম নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামীতে সাগর ও নদ-নদীতে ব্যাপক পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন মৎস্য বিভাগ ও জেলে-ব্যবসায়ীরা।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহেদ আলী জানিয়েছেন, বিশ্বের অন্যতম ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র বাংলাদেশ। ৭ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করেছে সরকার।এ সময়ে উপকূলের ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার জলসীমায় ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ওই সব স্থানে ডিম ছাড়তে গভীর সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে মা ইলিশ। ইলিশ অত্যন্ত দ্রুতগামী গভীর সামুদ্রিক মাছ। তারা সবসময় চিরচেনা পথে চলে। একবার যেখানে ডিম পাড়ার জন্য আসে, বার বার সেখানেই ফিরে আসে, এমনকি বাচ্চারাও (জাটকা)।
চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযাযী, ইলিশের শরীরের লম্বা দাগ আছে যাকে লেটিভাল লাইন বলে। আর কানের কোনে আছে গোলাকার রিংয়ের মতো, যাকে অটভিলিথ বলে। এর মাধ্যমেই ইলিশ তাদের গন্তব্য শনাক্ত করে থাকে। মা ইলিশ ডিম দেয়ার পর জাটকা (বাচ্চা) নদীতে বড় হয়ে দ্রুত ফিরে যায় গভীর সমুদ্রে। ওই জাটকা বড় হয়ে ডিম দেয়ার জন্য লেটিভাল ও অটভিলিথের মাধ্যমে জন্ম হওয়া স্থানেই ফিরে আসে বারবার। ইলিশের প্রজনন নির্ভর করে চাঁদের তিথির ওপর। আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার দিন ইলিশ ডিম ছাড়ে সবচেয়ে বেশি। তাই পূণির্মার আগের ৫ দিন ও পরের ৫ দিনকে ইলিশ প্রজনন হিসেবে নির্ধারণ করেছে গবেষকরা। তবে ডিম ছাড়া অমবস্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, সেটাও পরীক্ষিত। প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞা এক মাস করা হলে ভালো হতো বলেও তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, শত শত জেলে নৌকা ও ট্রলার উপকূলের বিভিন্ন স্থানে অলস সময় কাটাচ্ছে। মাছ ধরতে না পারায় জেলেদের কম বেশি আর্থিক কষ্ট চলছে। তবে এটা সত্য যে সত্য তেমনি প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞা ও বিরতির কারণে আগামী মৌসুমে ইলিশের প্রাচুর্যতা বাড়বে।
বাসস/সংবাদদাতা/রশিদ/১৫২০/-মরপা