কাঁচা আমে ভরে গেছে সাতক্ষীরার বাজার

720

সাতক্ষীরা, ৪ মে, ২০১৮ (বাসস) : গুণে ও মানে ভরা সাতক্ষীরার কাঁচা আম এখন বাজারে। প্রতিদিন সাতক্ষীরার বড় বাজারে শত শত মণ আম বেচাকেনা হচ্ছে। পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখন সাতক্ষীরার বিভিন্ন বাজারে। অন্য বছরের তুলনায় এবার কাঁচা আমের দাম দ্বিগুণ। প্রতি মণ আম এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২৪শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
আমের কদর বাড়ায় এখানকার আম রফতানি হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়। প্রতি কেজি কাঁচা আম বিক্রি করে পাচ্ছে কমপক্ষে ৪০-৬০ টাকা। আমের সাইজ বড় ও দেখতে সুন্দর হলে কেজি ৮০ টাকার উপরে। পাইকারি আম ব্যবসায়ীরা গ্রামের আম চাষীদের কাছ থেকে কম দামে সংগ্রহ করে ট্রাক ভর্র্তি করে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন সাতক্ষীরা থেকে ৩-৪ ট্রাক কাঁচা আম যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলাতে। যার বাজার দর ২ থেকে ৩ লাখ টাকার মতো।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা আম চাষীদের। আগামি ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পাকা আম বাজারে উঠতে শুরু করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও জেলা থেকে প্রায় ১০০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বছর যার পরিমাণ ছিল ৭০০ মেট্রিক টন ।
সাতক্ষীরা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, জেলার সাতটি উপজেলায় চলতি বছর চার হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগান রয়েছে ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি আমের বাগান রয়েছে। সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের অনুকূল হওয়ায় অন্য অঞ্চলে উৎপাদিত আমের চেয়ে সাতক্ষীরার আম বাজারে উঠতে থাকে সবার আগে। সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আটির আম এখন বাজারে।
কাঁচা আমের পাইকারী ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে আম কিনতে সাতক্ষীরা বড় বাজারে এসেছেন। তিনি ৩২ ঝুড়ি আম কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছেন। প্রতি ঝুড়িতে আম ধরে ১শ’ থেকে ১২০ কেজি। সেই হিসেবে গত তিনি সাতক্ষীরার বড় বাজার থেকে প্রায় একশ’ মণ কাঁচা আম কিনেছেন।
অন্যদিকে মুজাহেদ নামের এক ব্যবসায়ী ঢাকার বাইফেল থেকে এসেছেন। তিনিও প্রায় ১শ’ মণ কাঁচা আম কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছেন।
সাতক্ষীরা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান আরও জানান, সাতক্ষীরার আম গুণে-মানে সুস্বাদু। অন্যান্য জেলার থেকে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। এ জেলার মাটি আম চাষের উপযোগী। গত চার বছর ধরে এ জেলার আম ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। এবারও বাগান পরিচর্যা করা হচ্ছে বিদেশে আম পাঠানোর জন্য।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান, সাতক্ষীরার আম সারা দেশে সুখ্যাতি রয়েছে। সুনাম ক্ষুণœ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোক্তার অধিকার ক্ষুণœ করে আম পাকাতে কেউ ফরমালিনের আশ্রয় নিলে সর্বোচ্চ শান্তি নিশ্চিত করা হবে। মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করা হবে। সাথে থাকবে জরিমানার ব্যবস্থা।