বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করুন : টিভি চ্যানেলগুলোকে প্রধানমন্ত্রী

151

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা- মিডিয়া-ভাষণ
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করুন : টিভি চ্যানেলগুলোকে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী এ সময় দারিদ্র প্রায় ৪০ ভাগের ওপর থেকে ২১ ভাগে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের লক্ষ্য আরো বেশি, এটিকে ১৪, ১৫ বা ১৬ ভাগে নামিয়ে আনা।
এ সময় তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরফলে হত দারিদ্রের হারও ২২ ভাগ থেকে ১১ ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নটা যদি না হত তাহলে আপনাদের এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল কিন্তু মানুষ দেখতো না। কিন্তু এখন গ্রামের ঘরে ঘরে টেলিভিশন রয়েছে। হাটে বাজারে জনগণ টেলিভিশন দেখছে। কারণ, পেটে ভাত আছে, তারা কাজের সুযোগ পাচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে তারা সাবলম্বী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে একে ধরে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা এই অর্জনগুলো ধরে রাখতে পারলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতিটা স্থায়িত্ব লাভ করবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে নিয়েই বলেন, তারপরেও আমরা যেভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি তাতে করে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতে পারবো বলেই মনে করি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর সরকারের শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’এর প্রসঙ্গও উল্লেখ করে বলেন, জনসংখ্যা আমাদের বোঝা নয়, সম্পদ এবং তাঁদের কথা মাথায় রেখেই আমরা এই ডেল্টা পরিকল্পনাটা হাতে নিয়েছি।
বিনামূল্যে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বই বিতরণ, বৃত্তি-উপবৃত্তি প্রদান, স্কুল-কলেজ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম এবং কম্পিউটার ল্যাব নির্মাণসহ শিক্ষা সম্প্রসারণে তাঁর সরকারের উদ্যোগও এ সময় প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন।
তাঁর সরকার গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে বলেই বর্তমানের বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন, মৎস চাষসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে রয়েছে বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ’৯৬ পরবর্তী তাঁর সরকারের বেসরকারী খাতকে উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, সে কারণেই তাঁর সরকার এখন ৪১টি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে অনুমতি প্রদান করেছে এবং ৩০টি চ্যানেল এখন সম্প্রচারে রয়েছে।
জাতির পিতা আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন এবং এই দেশকে গড়ে তোলাই এখন আমাদের দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী প্রাইভেট টিভি চ্যানেলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, আমার এই কথাটা সবার কাছে পৌঁছে দেবেন যে, মানুষকে একটা কথা চিন্তা করতে হবে- সবকিছুতে সরকারের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না।
তিনি বলেন, আমরা নিজেরা কতটুকু কি করতে পারলাম, নিজেরা কি করলাম, দেশের জন্য এবং নিজের জন্য কি করতে পারি বা যে এলাকায় বসবাস করি সে এলাকার জন্য কি করতে পারি, এলাকার মানুষের জন্য কি করতে পারি সে চিন্তাটাও মানুষের মধ্যে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘মানুষের ভেতর একটা আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে, আমাদের নিজেদের কাজ নিজেরা করবো এবং নিজেদের করার মতন সেই দক্ষতাও আমরা অর্জন করবো। শেখ হাসিনা বলেন, সবসময় সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে নয় আমরা নিজেরাই নিজেদের দেশের উন্নয়ন করবো। আমি মনে করি এই চিন্তাটা দেশের মানুষের মধ্যে থাকতে হবে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এটিসিও নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যক্ট -২০১৮’ নিয়ে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এটি কোন বাধার সৃষ্টি করবে না। এ সময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রতি তাঁদেও পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
প্রেস সচিব বলেন, এটিসিও নেতৃবৃন্দ এ সময় অনলাইন মিডিয়াগুলোকে একটি জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাগিদ দেন।
বাসস/এএসজি-এফএন/একেএইচ/১৬৩৫/আরজি