বাসস দেশ-৯ : বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রত্যক্ষ রূপ পরিলক্ষিত : মাসুদ বিন মোমেন

143

বাসস দেশ-৯
জাতিসংঘ-স্থায়ী প্রতিনিধি
বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রত্যক্ষ রূপ পরিলক্ষিত : মাসুদ বিন মোমেন
ঢাকা, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, পৃথিবীতে সম্ভবত বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রত্যক্ষ রূপ পরিলক্ষিত।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা ছাড়াও সংসদ উপনেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং বিরোধী দলীয় নেতা সকলেই নারী। এছাড়াও চলতি সংসদে ৭২ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদেও রয়েছেন ৫ জন নারী।’
মাসুদ বিন মোমেন শুক্রবার (৫ অক্টোবর) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাধারণ পরিষদের চলতি ৭৩তম অধিবেশনের তৃতীয় কমিটির আওতায় ‘নারী অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে বক্তৃতা প্রদানকালে একথা বলেন।
আজ শনিবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে লিঙ্গসমতার বীজ বপন করেছিলেন উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি তার বক্তৃতায় বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) প্রকৃতই অনুধাবন করেছিলেন যে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া কাক্সিক্ষত সামাজিক উত্তরণ সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নারী অগ্রগতিকে জাতীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করেছেন।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বনেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গুটিকয়েক বিশ্বনেতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন যিনি জাতিসংঘের এমডিজি ও এসডিজি উভয় এজেন্ডা গ্রহণের সময় উপস্থিত ছিলেন। সফল ও ধারাবাহিক নারী নেতৃত্বের এটি এক অনন্য উদাহরণ।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে প্রাপ্ত গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ ও নারী অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখার জন্য তাঁর (শেখ হাসিনা) আরো অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার কথাও তুলে ধরেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে নারী অগ্রগতি বিষয়ে প্রদত্ত বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে তিনটি কার্যকর পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছিলেন স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমের তা পূনরুল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনার প্রস্তাগুলো হচ্ছে, নারী সামর্থ্যরে ক্ষেত্রে চিরাচরিত লিঙ্গধারণা পাল্টাতে হবে; নারীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতির প্রয়োগসহ নারীদের জন্য প্রতিটি সেক্টরে সুযোগের সমতা সৃষ্টি করতে হবে।
বাংলাদেশে নারী অগ্রগতির বিষয়টি একটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এ কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি নারী উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষি, সেবা ও শিল্প খাতে প্রায় ২০ মিলিয়ন নারী কাজ করছে। তৈরী পোশাক শিল্প খাতে ৮০ শতাংশই নারী কর্মী। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা দমন, বাল্য বিবাহ রোধ, নারী পাচার প্রতিরোধ এবং নারী-পুরুষের সমতা আনয়নে শেখ হাসিনার সরকার নানাবিধ আইন ও কর্মপন্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা প্রান্তিক ও ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় এনেছি যাতে কেউ পিছনে পড়ে না থাকে।’
জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন, ক্রীড়া ও শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের সাফল্যের কথাও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম- ২০১৭’র জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুযায়ী লিঙ্গ সমতায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পরপর তিনবার প্রথম স্থান দখল করেছে।
স্থায়ী প্রতিনিধি এ সময় উল্লেখ করেন, জাতিসংঘেও নারী অগ্রগতি ইস্যুতে বাংলাদেশ অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাসস/সবি/জেডআরএম/১৬৩০/জেহক