মীরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরণে সন্দেহভাজন ২ জঙ্গি নিহত

454

চট্টগ্রাম, ৫ অক্টোবর ২০১৮ (বাসস) : চট্টগ্রামের মীরসরাই জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরণে জেএমবি’র ২ জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৭) জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ২ জঙ্গির মৃতদেহ, একটি অত্যাধুনিক একে ২২ রাইফেল, তিনটি পিস্তল ও পাঁচটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড উদ্ধার করেছে।
আজ শুক্রবার উপজেলার জোরারগঞ্জ উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ্ববর্তী ‘চৌধুরী ম্যানশন’ বাড়িতে এ অভিযান চলে। র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা থেকে ‘চৌধুরী ম্যানশন’ নামের সেমিপাকা বাড়িটি ঘিরে রাখে র‌্যাব। এরপর র‌্যাবকে লক্ষ্য করে বাড়ির ভেতর থেকে গুলি ছুড়লে র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রায় তিন ঘণ্টা উভয়ের মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভোর পৌনে ৪টার দিকে র‌্যাবের পক্ষ থেকে ভেতরে থাকা জঙ্গি সদস্যদের আত্মসমর্পন করতে বলা হয়। এক পর্যায়ে ঘরে থাকা জঙ্গি সদস্যরা বিকট শব্দে দুটি শক্তিশালী বোমা ফাটায়। এরপর আর ঘরের ভেতর কারো কোনো সাড়া শব্দ মেলেনি। এরআগে ঢাকা থেকে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। তাদের অভিযানের প্রায় ৪০ মিনিট পর দুইজন পুরুষের ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, জঙ্গিদের চট্টগ্রামে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিলো। প্রথম টার্গেট ছিলো চট্টগ্রাম আদালত ভবন। তিনি বলেন উদ্ধারকৃত এ কে ২২ রাইফেলটি অত্যাধুনিক। এ ধরণের রাইফেল হলি আর্টিজন হামলার সময় জঙ্গিরা ব্যবহার করেছিলো।
‘চৌধুরী ম্যানশন’ নামে ওই বাড়ির মালিক ও কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলেও মুফতি মাহমুদ খান জানিয়েছেন। তিনি জানান, সোহেল নামের এক লোক গত ২৯ সেপ্টেম্বর মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় পাঁচ কক্ষের ওই বাসা ভাড়া নেন। তবে ভাড়া দেওয়ার সময় ভাড়াটিয়াদের জাতীয় পরিচয়পত্র রাখা হয়নি বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন বাড়ির মালিক ও কেয়ারটেকার।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, গত দুই মাসে বেশ কয়েকটি জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়ে র‌্যাব জানতে পারে, একটি গ্রুপ চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে এবং তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ আছে। তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে জোরারগঞ্জের ওই বাড়ি চিহ্নিত করে ঘিরে ফেলেন। ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকালে ওই বাড়ির আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে দুটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) খুঁজে পান। পরে বাড়ির ভেতরে তল্লশি চালিয়ে পাওয়া যায় আরও তিনটি আইইডি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়- ‘চৌধুরী ম্যানশন’ বাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে একশ গজ দূরত্বে সোনাপাহাড় মইনউদ্দিন চৌধুরী পেট্রোল পাম্পের সামনে এবং মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর মালিকানাধীন। এটি রেল লাইনেরও কাছে। বোম বিস্ফোরণে বাড়িটি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ঘরের চাল উড়ে যায় এবং জিনিসপত্র টুকরো টুকরো হয়ে যায়।