টটেনহ্যামকে জিততে দিল না বার্সেলোনা, মেসির জোড়া গোল

250

লন্ডন, ৪ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : লিওনেল মেসির জোড়া গোলে ওয়েম্বলিতে টটেনহ্যামের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৪-২ গোলের দারুন এক জয় তুলে নিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচে অপর গোল দুটি করেছেন ফিলিপ কুটিনহো ও ইভান রাকিটিচ।
লা লিগায় শেষ তিনটি ম্যাচে জয় বিহীন থাকা আর্নেস্টো ভালভার্দের দল কাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ-বি’র ম্যাচে স্পারসদের বিপক্ষে লড়াই করতে লন্ডনে এসেছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের জাতীয় স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের যেন অতীত অভিজ্ঞতাই সহায়তা করেছে। ১৯৯২ ও ২০১১ সালে এই মাঠেই তারা জয় করেছিল ইউরোপীয়ান কাপ। সেই স্মৃতিকে পুঁজি করেই আইকনিক এই ভেন্যুতে কাল খেলতে নেমেছিল কাতালান জায়ান্টরা।
হুগো লোরিসের মত অভিজ্ঞ গোলরক্ষককে নিয়েও টটেনহ্যাম শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেনি। মূলত মাত্র ৯২ সেকেন্ডের মধ্যে ফিলিপ কুটিনহোর গোলে বার্সেলোনার এগিয়ে যাওয়া স্পারসদের পুরো ম্যাচে আর ফিরতে দেয়নি। ২০০৫ সালের পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটাই বার্সেলোনার সবচেয়ে দ্রুততম গোল। ২৮ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচের শক্তিশালী হাফ-ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুন হয়। নাটকীয় দ্বিতীয়ার্ধে হ্যারি কেন টটেনহ্যামের হয়ে এক গোল পরিশোধ করলেও মেসির কল্যাণে তৃতীয় গোলের দেখা পায় বার্সা। এরিক লামেলার ডিফ্লেকটেড শট টটেনহ্যামকে আবারো লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনলেও ম্যাচের শেষ মিনিটে মেসির দ্বিতীয় গোলে গ্রুপ পর্বে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় বার্সেলোনা। অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচে পরাজিত হয়ে তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছে টটেনহ্যাম। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল মরিসিও পোচেত্তিনোর দল। আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ পিএসভি এইনডোভেন। বার্সা ও ইন্টারের থেকে ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকার কারনে পরের ম্যাচে টটেনহ্যামের জয়ের বিকল্প নেই।
কালকের ম্যাচে মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে মেসির সুবাদে বার্সা এগিয়ে যায়। সন হেয়াং-মিনের বাঁধা পেরিয়ে মেসি জোর্দি আলবার দিকে দারুনভাবে বল এগিয়ে দেন। টটেনহ্যাম ডিফেন্ডার কিয়েরান ট্রিপারের পাশ কাটিয়ে আলবা কুটিনহোর দিকে বল বাড়িয়ে দিলে সাবেক এই লিভারপুল ফরোয়ার্ড জোড়ালো শটে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন। ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক লোরিসের এটি ছিল আগস্টের পর প্রথম ম্যাচ। থাইয়ের ইনজুরির কারনে তিনি এতদিন বিশ্রামে ছিলেন। বার্সেলোনার প্রথম গোলটির পিছনে লোরিসের বাজে একটি ভুলকে দায়ী করা যায়।
যদিও ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন, ডেলে আলি, মোসা ডেম্বেলের মত তারকাদের ইনজুরির কারনে হারিয়ে টটেনহ্যাম প্রথম থেকেই কিছুই ব্যাক-ফুটে ছিল। ২৫ মিনিটে কেনের একটি শট আটকাতে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগানকে। তবে ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করতে কোন ভুল করেননি রাকিটিচ। মেসির বাড়ানোর পাস কুটিনহো টাচলাইনের পিছন থেকে নিয়ে রাকিটিচকে এগিয়ে দেন। জোড়ারো এক হাফ-ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুন করেন এই ক্রোয়েট তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মেসি টটেনহ্যামকে নিয়ে যেন ছেলেখেলা শুরু করে। তার জন্য গোল করা সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। তারই ধারাবাহিকতায় মেসির একটি শট গোলপোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৫২ মিনিটে অবশ্য কেন টটেনহ্যামকে কিছুটা জীবন ফিরিয়ে দেন। ক্যারিয়ারে ১২টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে এই নিয়ে দশম গোল করলেন কেন। ৫৬ মিনিটে আলবার পাস থেকে মেসি লোরিসকে পরাস্ত করেন। তারপরেও ম্যাচ ছেড়ে দেয়নি স্বাগিতকরা। ৬৬ মিনিটে লামেলার গোলে আবারো স্বপ্ন দেখতে শুরু করে টটেনহ্যাম। কিন্তু ৯০ মিনিটে আলবার ক্রস থেকে মেসি নিজের দ্বিতীয় গোল করলে বার্সার জয় নিশ্চিত হয়।
বাসস/নীহা/১৩৩০/এএমটি