নওগাঁ’র মহাদেবপুরে হলুদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

645

নওগাঁ, ২ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : জেলার মহাদেবপুরে চলতি মৌসুমে বিপুল পরিমাণ জমিতে হলুদের আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের ধারণা এ বছর এ উপজেলায় হলুদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ উপজেলায় হলুদের আবাদ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভালো বীজ আর কৃষি বিভাগের নিবিড় পর্যবেক্ষণের কারণে হলুদ চাষের এ ব্যাপকতা বলে মনে করেন কৃষকরা।
উপজেলার মাহিনগর, কুমিরদহ, কালনা, শেরপুর, এনায়েতপুর, মহিষবাথান, গোফানগর, নাটশাল, গোপালপুর, ফাজিলপুর, শিবগঞ্জ, সুলতানপুর, পাটাকাটা, রামচরণপুর, কুঞ্জবন, মধুবনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় মাঠে কৃষকরা হলুদের পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মাহিনগর গ্রামের হলুদ চাষি আবদুর রাজ্জাক বলেন, বারী-১সহ প্রভৃতি জাতের হলুদ এ উপজেলায় চাষ হচ্ছে। এ মৌসুমে হলুদের ভাল ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি। এ জাতের হলুদ আকারে মোটা এবং রং অন্যান্য হলুদের তুলনায় ভাল। এ জাতের হলুদ প্রতি বিঘা জমিতে ৪০ থেকে ৪৫ মণ উৎপাদন হয়। গত মৌসুমে প্রতি মণ কাঁচা হলুদ বিক্রি হয়েছে আটশ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এ মৌসুমে এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার দুইশ টাকায় বিক্রির আশা করছেন তিনি। হলুদ চাষে জৈবসার ব্যবহারে খরচ খুব কম হয়। বিঘা প্রতি সার ও বীজসহ খরচ হয় প্রায় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমির কাঁচা হলুদ গত মৌসুমে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায়। এ বছর বিক্রি হবে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। সে ক্ষেত্রে এক বিঘা হলুদ চাষ করে কৃষকরা সমুদয় খরচ বাদ দিয়ে নীট লাভ করবেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
শিবগঞ্জ গ্রমের নাজিম উদ্দিন জানান, বাগানের ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদ চাষ ভালো হয়। গত মৌসুমো বারী-১ জাতের ৪০ কেজি হলুদ রোপণ করে ১৫ মণ হলুদ পেয়েছেন তিনি। এ মৌসুমেও ফলন ভাল হবে আশা করেন এ কৃষক। হলুদ উঠানোর মৌসুমে বীজ সংরক্ষণ করতে হয়। তবে কৃষকরা মনে করেন সরকারিভাবে বীজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আগামীতে অনেক চাষি হলুদ চাষ করতে আগ্রহী হবেন। মহাদেবপুর বাজারের হলুদ ব্যবসায়ীরা জানান, এ উপজেলার হলুদের সুনাম দেশব্যাপী রয়েছে। তারা প্রতি শনিবার ও বুধবার মহাদেবপুরের হাটে হলুদ কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে নিয়ে যান। বর্তমানে ৪০ কেজি শুকনো হলুদ সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম প্রামানিক জানান, চলতি মৌসুমে মহাদেবপুর উপজেলায় ১১০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। উপজেলার পাশ দিয়ে আত্রায় নদী বয়ে যাওয়ায় নদীমাতৃক এলাকায় উর্বর জমিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিন আশা করছেন।