আমতলীতে বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে শেখ রাসেল মার্কেট

276

বরগুনা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : বরগুনার আমতলী পৌর শহরের তিন রাস্তার মোড় থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত সদর রোডের উত্তর দক্ষিণে পশ্চিম পাশটিতে হাতে গোনা কয়েকটি দোকান ও পেশাজীবিদের চেম্বার ছিল। বাকী অংশটি একেবারেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিলো। অনেকগুলো ডোবা, নালার পাড়ের এ অংশটি দেখতেও সুন্দর ছিলো না। বর্ষা মৌসুমে ডোবা, নালা থেকে সাপসহ নানা পোকামাকড় রাস্তাঘাট ও আশপাশের ঘরবাড়িতে প্রবেশ করতো। শুকনো মৌসুমে ছড়াতো দুর্গন্ধ। নতুন বাজার থেকে আমতলীর পুরান বাজার অর্থাৎ মূল বাজারে যাওয়ার পথে এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ জায়গাটিকে শহরের অংশ বলেই মনে হতো না। প্রায় ভূতরেই ছিলো বলা চলে।
সড়কটির পশ্চিম পাশের ভূমির মালিক জেলা পরিষদ নিয়েছে একটি অনন্য উদ্যোগ। স্থানীয় বেকার যুবক এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের আয়বর্ধক কাজের জন্য জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ দেলোয়ার হোসেন। বাৎসরিক ভিত্তিতে ইজারা বরাদ্দ নিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে, ডোবার পাড়ে কাঠ ও টিনের সুদৃশ্য দোকানগুলো গড়ে তোলায় খালি রাস্তাটিকে ব্যস্ততম ‘মার্কেট প্লেস’র আওতায় এনে নতুনবাজার ও পুরান বাজারের মধ্যে যোগসূত্র তৈরী করে দিয়েছে। জেলা চেয়ারম্যানের উদ্যোগে বর্তমানে দারুন জমজমাট এ বাজারটির নামকরণ করা হয়েছে ‘শেখ রাসেল মার্কেট’।
শেখ রাসেল মার্কেটে রাজনীতিবিদদের, আইনজীবীদের, চিকিৎসকের চেম্বারসহ ইলেক্ট্রনিকস, ইলেক্ট্রিক্যাল, হোটেল, ফার্নিচার, স্টিল, ওয়ার্কশপ, সেলুন, ফার্স্টফুড, মিনি চাইনিজ, ফার্মেসি, কাপড়ের দোকান, গার্মেন্টস দোকান, স্টেশনারি নানা ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমতলী শহরের নিজস্ব বাসা নেই এমন লোকজন নিচে দোকান এবং তার উপরে আবাসনেরও ব্যবস্থা করতে পেরেছেন।
আমতলী উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদ দেওয়ান জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের উদ্যোগে আওয়ামী লীগ দল করা অনেক ত্যাগী নেতাকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। জেলা চেয়ারম্যান নিজে একজন ত্যাগী নেতা। তাই তিনি প্রকৃত কর্মীদের, পাশাপাশি স্থানীয় বেকার ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা ও গুলিশাখালী ইউপির চেয়ারম্যান অ্যাড. নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ রাসেল মার্কেটের জন্য এ রোডের জায়গা ও ঘর-বাড়ির মূল্য, গুরুত্ব বেড়ে গেছে। জমজমাট হওয়ার কারণে অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে নতুন নতুন মার্কেট গড়ে তুলছেন।
বরগুনা জেলা পরিষদের প্রকৌশলী শহিদুল আলম জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ৬০ জনের নামে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দাপ্তরিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রতি স্কায়ার বর্গফুট জায়গার বিপরীতে পঞ্চাশ টাকা হারে জেলা পরিষদের বাৎসরিক আয় হবে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, জায়গাগুলো পরিত্যাক্ত অবস্থায় ছিল। এগুলো বরাদ্দ দেয়াতে জনসেবার পাশাপাশি জেলা পরিষদের রাজস্ব আদায় হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আরও বরাদ্দ দেয়া হবে।
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আ. মোতালিব জানান, ‘আমতলীর বিজ্ঞ আইজীবীদের অধিকাংশের ল চেম্বারগুলো জেলা পরিষদের জায়গাতে। জেলা পরিষদের এ সহযোগিতায় আমরা কৃতজ্ঞ।’
জেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ‘আমার একটু উদ্যোগে যদি একশ’ মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন ঘটে এতে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। এ জায়গা বরাদ্দে নানা চাপ ও প্রতিকুলতা আসলেও আমি তা গ্রাহ্য করছিনা।’