উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত

745

ঢাকা, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ রোববার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশজুড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বুদ্ধ পূজা, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, প্রভাত ফেরি, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও মানব জাতির সর্বাঙ্গীণ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও নির্বাণ লাভ এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর অপর নাম দেয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’।
‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এই অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধিপ্রাপ্তি আর মহাপরিনির্বাণ- এই স্মৃতি বিজড়িত এ দিনটিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা হিসাবে পালন করেন বুদ্ধ ভক্তরা।
বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন রাজধানীর মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিবসটি উৎসবমুখর এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপনের জন্য দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকাল দশটায় বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান এবং সন্ধ্যে ৬টায় আলোচনাসভা
এদিনে রাজধানীর কমলাপুরে ঐতিহাসিক ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ আয়োজিত ‘বুদ্ধ পূর্ণিমার তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনায় সকল ধর্মের মানুষকে এক হয়ে ধর্মের মুখোশ পরা ধর্মনাশী ধর্মবাজদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন সভার প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধার্মিকেরা ধর্মচচা করেন আর ধর্মের মুখোশধারী ধর্মবাজরা ধর্মনাশ করে। তারাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও সমাজে বিশৃংখলাকারী।’
সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথেরো’র সভাপতিত্বে সভায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে এদিন পূজা-অর্চনার পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর পরিচালনায় পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ ও সমবেত প্রার্থনায় অংশ নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করে।
সারাদেশে রাষ্ট্রীয় ছুটির এদিনের শুরুতে শান্তি শোভাযাত্রা এবং বৌদ্ধ মঠ ও মন্দিরগুলোতে দিনব্যাপী প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পূজা ও প্রার্থনার আয়োজন করে বুদ্ধের আদর্শ অনুসারী বৌদ্ধ সম্প্রদায়।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে গৌতম বুদ্ধ ও তার আদর্শকে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন।