দেশপ্রেম ও কর্মপ্রাণতার সুমহান দৃষ্টান্ত ভাষাসংগ্রামী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত

296

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ (বাসস) : ভাষাসংগ্রামী শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সাহস, দেশপ্রেম এবং কর্মপ্রাণতার এক সুমহান দৃষ্টান্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধে বর্বর পাকবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে জীবনদান করে তিনি অনাগত ভবিষ্যতের কাছে দেশপ্রেমের এক অত্যুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।
বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘ শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারক বক্তৃতানুষ্ঠানে’ বক্তারা এই অভিমত রাখেন।
বাংলা একাডেমির কবি শামুসর রাহমান সেমিনার কক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সভায় সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার সভাপতিত্ব করেন। নির্ধার্রিত বিষয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গবেষক ও প্রকাশক নিশাত জাহান রানা। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
নিশাত জাহান রানা বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের মতো মানুষকে নিত্য স্মরণে রাখলে কখনোই পথ হারাবে না বাংলাদেশ। পাকিস্তান গণপরিষদে রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান বাংলা ভাষার ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে দিয়েছিল অসামান্য গতি। তিনি শুধু ভাষাবীর নন , রাজনীতি এবং সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন একজন অনন্য কর্মবীর। সমাজের নি¤œবর্গের মানুষ, অবহেলিত নারী সম্প্রদায় এবং অস্পৃশ্যতার অভিশাপে তিলে তিলে দগ্ধ হওয়া মানুষের প্রতি তিনি তাঁর দায় পালন করে গেছেন, তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য লড়াই করেছেন।¯
তিনি বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সাহস, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রজাহিতৈষী নানান আইন প্রণয়নের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন নিবিড়ভাবে। তিনি বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর আত্মকথায় বর্ণনা করেছেন কী করে ধাপে ধাপে অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশ ও জাতির সপক্ষে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত থেকে মানুষের অধিকার আদায়ের চেষ্টা করেছেন।
স্বাগত ভাষণে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সাহসী অবদানে বাংলা ভাষার আন্দোলন যেমন বেগবান হয়, তেমনি বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনারও বিকাশ ঘটে।
সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন একজন স্থিরলক্ষ মানুষ । নিজের ভাষা- সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং নিজ দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি দায় পূরণ ছিল যাঁর জীবনের প্রধান লক্ষ। তার সংগ্রামী জীবনের পরিক্রমায় আমরা দেখব সমস্ত বস্তুগত বাসনার ঊর্ধ্বে ওঠে মহৎ-মানবিক বৃত্তির নিরন্তর সাধনা।
তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক-আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত আমাদের কাছে আলোকশিখা হয়ে প্রতিভাত হবেন সব সময়।