বাসস দেশ-৮ : জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রশ্নে আদেশ আগামীকাল

121

বাসস দেশ-৮
অনাস্থা-চ্যারিটেবল-আদেশ
জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রশ্নে আদেশ আগামীকাল
ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারকের প্রতি দুই আসামী জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের অনাস্থা বিষয়ে আগামীকাল বুধবার আদেশ দেয়া হবে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত আজ এ আদেশ দেন। জিয়াউল ইসলাম মুন্নার জামিন আবেদন করা হলে আদালত আদেশের জন্য কাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন। খালেদা জিয়ার জামিন বৃদ্ধির আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত।
দুদকের পক্ষে কৌঁসুলি মোশররফ হোসেন কাজল বাসস’কে বলেন, এ মামলার আসামি চারজন। আসামীরা হচ্ছেন-বেগম খালেদা জিয়া, তার প্রধানমšী¿ত্বের সময়ের রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন এবং তার (খালেদা জিয়া) জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন পেশ করে।
আদালত খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপরপরই খালেদা জিয়ার আইনজীবী চলে যান। তখন আদালত বলেন, ‘ তারা শুধু কি জামিনের জন্যই আসেন। বেল পিটিশন মঞ্জুরের পরেই উনি চলে গেলেন। কোর্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি থাকতে পারতেন।’ খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদারকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এর আগে খালেদা জিয়ার জামিন বাড়ার আবেদনের ওপর শুনানি ও আদেশের পর ২০ মিনিটের বিরতিতে যায় আদালত। বিরতির পর আবারও বিচারক এজলাসে আসেন। কিন্তু এসময় আদালতে ছিলেন না খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলামের অনাস্থার আবেদনের ওপর দুই পক্ষের বক্তব্য শোনেন আদালত। এ বিষয়ে আদেশ কাল বুধবার দেয়া হবে। এছাড়াও খালেদা জিয়া সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত শুনানি না করার আবেদনের বিষয়েও আগামীকাল আদেশের দিন ঠিক করা হয়।
গতকাল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলায় আসামী জিয়াউল ইসলাম মুন্নার জামিন বাতিল করে আদেশ দেন আদালত। গত ২০ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই যুক্তিতর্ক শুনানি তথা বিচার চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল গত ১২ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সেদিন খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ। তার পরিবর্তে খালেদার কাস্টডি আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে ‘অনিচ্ছুক’। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বরও খালেদার ‘অনিচ্ছা’র কথা জানিয়ে একই কাস্টডি পাঠানো হয় আদালতে। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে কি-না, এ বিষয়ে সেদিন মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে ২০ সেপ্টেম্বর আদেশ দেন আদালত।
গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে বলেন,অসুস্থতার কারণে তিনি আর আদালতে হাজির হতে পারবেন না। ওইদিন তার আইনজীবীরাও উপস্থিত হননি আদালতে। গত ৪ সেপ্টেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিভাগ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার সম্পন্ন করতে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে গেজেট প্রকাশ করে। আইন মন্ত্রণালয়ের ওই গেজেটে বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত থেকে নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নম্বর-৭ কে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে সেখানেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হবে।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে এ মামলা করে দুদক।
এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে এখন পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা ভোগ করছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ মামলায় রায় দেন বিচারিক আদালত। ওইদিন থেকেই কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৭০০/-আসচৌ