বাসস সংসদ-৬ : সংসদে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বিল, ২০১৮ পাস

383

বাসস সংসদ-৬
বিল-পাস
সংসদে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বিল, ২০১৮ পাস
সংসদ ভবন, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮(বাসস) : বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ সাধনে বিদ্যমান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আদেশ রহিত করে প্রয়োজনীয় বিধান করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বিল, ২০১৮ আজ সংসদে সংশোধিত আকারে পাস করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজম্মেল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।
বিলে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও জামায়াতে ইসলাম এবং তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। এরূপ সকল বেসামরিক নাগরিক এবং সশস্ত্র বাহিনী, মুজিব বাহিনী, মুক্তি বাহিনী ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ই. পি. আর. নৌ কমান্ডো, আনসার বাহিনীর সদস্য এবং নি¤œবর্ণিত বাংলাদেশের নাগরিকগণ, ওই সময়ে যাদের বয়স সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।
সংজ্ঞায় বলা হয়, যে সকল ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। যে সকল বাংলাদেশী পেশাজীবী মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন এবং যে সকল বাংলাদেশী নাগরিক বিশ্বজনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।
বিলে বলা হয়, যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) অধীন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সাথে সম্পৃক্ত সকল এম. এন. এ (মেম্বার অব ন্যাশনাল এসেম্বলী) বা এম. পি. এ (মেম্বার অব প্রভিনসিয়াল এসেম্বলী), যারা পরবর্তীকালে গণপরিষদের সদস্য (মেম্বার অব কনস্টটিয়েন্ট এসেম্বলী) হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন।
সংজ্ঞায় বলা হয়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী দ্বারা নির্যাতিতা সকল নারী (বীরাঙ্গনা)। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সকল শিল্পী ও কলাকৌসুলী দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সকল বাংলাদেশী সাংবাদিক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সকল খেলোয়াড়, মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী মেডিকেল টিমের সকল চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সেবাকারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবে।
বিলের বিধানের উদ্দেশ্য পূরণে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আদেশ ১৯৭২-এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এ বিধানের অধীন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে গণ্য করার বিধান করা হয়। ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় স্থাপনের বিধান করা হয়।
বিলে ট্রাস্টের কার্যাবলী, প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন, ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যাবলী, বোর্ডের সভা, ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী, কর্মচারী নিয়োগ, ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে নির্বাহী কমিটি গঠন, নির্বাহী কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী, নির্বাহী কমিটির ক্ষমতা ও সভা, ট্রাস্টের তহবিল, বাজেট, হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা, বার্ষিক প্রতিবেদন, ক্ষমতা অর্পণ, বিধি-প্রবিধি প্রণয়নের ক্ষমতাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়।
জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, সেলিম উদ্দিন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, নূরুল ইসলাম মিলন, কাজী ফিরোজ রশীদ, মোহাম্মদ নোমান, বেগম রওশন আরা মান্নান, বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী ও বেগম মাহজাবীন মোরশেদ বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে একটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়। বাকী প্রস্তাবগুলো কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বাসস/এমআর/১৯৫০/বেউ/-আসচৌ