বাজিস-৬ : লাখাইয়ে কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস পালন

166

বাজিস-৬
লাখাই-গণহত্যা
লাখাইয়ে কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস পালন
হবিগঞ্জ, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ (বাসস) : জেলার লাখাই উপজেলায় কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে কৃষ্ণপুর এলাকাবাসী মঙ্গলবার দুপুরে বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতি সৌধে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অমরেন্দ্র লাল রায় এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন সহকারী কমিশনার ভূমি জাহিদুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন কুমার দে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক ডেপুটি কমান্ডার গৌর প্রসাদ রায়, শিক্ষক লিটন সূত্রধর ও আমিরুল ইসলাম আলম।
এর আগে অতিথিবৃন্দ শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে স্মৃতি সৌধে পুস্প স্তবক অর্পণ করেন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর লাখাই উপজেলার হাওর এলাকা কৃষ্ণপুর গ্রামে নৃসংস হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ১২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। পঙ্গুত্ব বরণ করে এখনও বেঁচে আছেন আরও অন্তত ১৫/২০জন। কৃষ্ণপুরের পার্শ্ববর্তী চন্ডিপুর। ১৬টি বাড়ি ছিল সেখানে। ৭১ সালে পাক বাহিনী সবকটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এখন সেখানে একটি পুকুর রয়েছে। গ্রামের ছিটেফুটাও নেই।
প্রিয়তোষ রায় জানান-১৯৭১ সালের ২ সেপ্টেম্বর পাক বাহিনীর গুলিতে কে কোনদিকে মরছে তা দেখার উপায় নেই। চোখ বেঁধে আমাকে অনেক মারপিট করছে। লাশ গুলো ভাসিয়ে দেয়া হয়। লাশ কোথায় গেছে তা আমরা জানি না। লাশের গলায় কলসি বা ইট বেধে লাশ গুলো পাশের নদীতে ফেলা দেয়া হয়। সৎকার করার কোনো লোক ছিল না গ্রামে। তাছাড়া বর্ষা ছিল। লাশগুলো কোথায় রাখা যাবে? তাই আমরা লাশগুলোকে এক এক করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছি।
স্থানীয়রা জানান, খেলু রাজাকার ও লাল খা রাজাকার মিলিত হয়ে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে অবস্থানকারী পাক বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে কৃষ্ণপুর গ্রামের ১২৭জনকে হত্যা করে। অষ্টগ্রামের পাক সেনারা কৃষ্ণপুর গ্রামে ভোর বেলায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তা লাখাই উপজেলায় অবস্থানকারী পাক সেনারা বা শান্তি কমিটির কেউ জানত না।
কৃষ্ণপুরের গণহত্যার জন্য দায়ী করা হয় মুড়াকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে। তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুন্যালে মামলা হয়েছে। চলছে স্বাক্ষ্য গ্রহণ। এরই মধ্যে গোপনে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছেন লিয়াকত আলী।
বাসস/সংবাদদাতা/১৬২৩/মরপা