আরেকটি ট্রেবল জয়ের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হেইঙ্কেস

332

বার্লিন, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : বুধবার চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে জুপ হেইঙ্কেসের বায়ার্ন মিউনিখ মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদের। সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচটিকে ক্যারিয়ারে মিউনিখের হয়ে আরেকটি ট্রেবল জয়ের চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন হেইঙ্কেস।
৭২ বছর বয়সী হেইঙ্কেস ইতোমধ্যেই দু’টি ক্লাবের প্রধান কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা জিতেছেন। ১৯৯৮ সালে রিয়ালের হয়ে শিরোপা জয়ের পরে ২০১৩ সালে বায়ার্নকে চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা উপহার দেন। ঐ বছর বেভারিয়ান্সরা ট্রেবল জয়ের মাধ্যমে মৌসুম শেষ করেছিল।
এই বয়সে যেখানে তার সমসাময়িক কোচরা বেশীরভাগই ক্যারিয়ারের ইতি টেনে পরিবার নিয়ে ব্যস্ত সেখানে হেইঙ্কেস ইউরোপীয়ান আসরে একের পর এক হাই প্রোফাইল ম্যাচের চাপ নিয়ে যাচ্ছেন। আর চাপ সামলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফলও হয়েছেন। হেইঙ্কেস বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সত্যিই এই দুই দলের ম্যাচ মানে দারুণ এক উত্তেজনা। ইউরোপীয়ান ফুটবলে যে দু’টি দলের ঐতিহ্য দারুণ সমৃদ্ধ। যারা আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে ভালবাসে, এটা দুই দলের জন্যই কঠিন এক লড়াই।’
এবারের চ্যাম্পিয়নস লীগ আসরে একমাত্র দল হিসেবে বায়ার্নই টিকে রয়েছে যাদের সামনে এখনো ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তিন সপ্তাহ আগেই টানা ষষ্ঠ বুন্দেসলিগা শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে, আগামী ১৯ মে জার্মান কাপের ফাইনালে তারা এইনট্র্যাক ফ্র্যাংকফুর্টের মুখোমুখি হবে। ২৬ মে কিভে যদি বায়ার্ন চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা জিততে পারে তবে ঐ মাসের শুরুতেই ৭৩ বছর পা রাখতে যাওয়া হেইঙ্কেস হবেন সবচেয়ে বেশী বয়সী কোচ হিসেবে ইউরোপীয়ান কাপ জয়ের গর্বিত মালিক। ১৯৯৩ সালে মিউনিখে চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের মাধ্যমে মার্সেই কোচ রেমন্ড গোয়েথালস ৭১ বছর ২৩১ দিন বয়সে এতদিন পর্যন্ত এই তালিকায় শীর্ষে ছিলেন। আগামী মৌসুমে তার স্থানে বায়ার্নের কোচ হচ্ছে নিকো কোভাচ। সে কারণেষ বায়ার্ন থেকে বিদায়ের আগে শিরোপা জয়টা বাড়তি প্রেরণা হয়েই থাকবে।
ইতোমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লীগে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন হেইঙ্কেস। সেভিয়ার বিপক্ষে প্রথম লেগে ২-১ গোলের জয় ছিল কোচ হিসেবে এই প্রতিযোগিতায় তার টানা ১২তম জয়। এর আগে ২০১২/১৩ মৌসুমে বায়ার্নের কোচ হিসেবে তিনি এই রেকর্ড গড়েছিলেন। বার্সেলোনা ও বায়ার্নের হয়ে লুইস ফন গাল ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে কার্লো আনচেলত্তি টানা ১০’র অধিক ম্যাচ জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। গ্রুপ পর্বে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইর কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হবার পরে আনচেলত্তির স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন হেইঙ্কেস। এই নিয়ে চতুর্থ মেয়াদে তিনি বায়ার্নের দায়িত্বে আসলেন।
২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস লীগ, বুন্দেসলিগা ও জার্মান কাপ জয়ের পরে তিনি সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। তখন তার স্থানে বায়ার্নের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান পেপ গার্দিওলা। কিন্তু পরবর্তীতে আবারো সল্প সময়ের জন্য হেইঙ্কেস যখন বায়ার্নের দায়িত্বে আসেন তখন লীগে শীর্ষে থাকা বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল বেভারিয়ান্সরা। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা জোড়দার, ট্রেনিং সেশনের গভীরতাসহ অন্যান্য সব বিষয়ে পরিবর্তন এনে তারকা সমৃদ্ধ বায়ার্নকে আবারো গতিপথে ফিরিয়ে আনেন হেইঙ্কেস। আর তার ফসল হিসেবে পরবর্তী ২৪ ম্যাচে ২৩তম জয় তুলে নেয় বায়ার্ন।