সৈয়দপুরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর পাচ্ছেন ৩০০ পরিবার

180

নীলফামারী, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় জমি আছে বসবাসের ঘর নেই এমন ৩০০ পরিবার পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর।
পরিবারগুলো পাচ্ছে আরসিসি পিলারের টিন সেডের পাকা মেঝের একটি করে ঘর। তাতে রয়েছে খোলা বারান্দা ও স্যানিটারী ল্যাট্রিনের সুব্যবস্থা। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। শুরু হয়েছে নির্মাণ কাজ, পর্যায়ক্রমে এসব পরিবারে মাঝে ঘর প্রদানের কাজও শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগে উপজেলার অসহায়, দারিদ্র ও ভাসমান মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হচ্ছে। উন্নয়ন ঘটবে এসব পরিবারের কয়েক হাজার মানুষের জীবনমানের। আর তাই প্রচ- খুশি গৃহহীন অসহায় পরিবারের মানুষগুলো।
উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালাপাড়া গ্রামের ছপিয়া বেগম (৫৫) কোন রকম একটি ঝুপড়ির মধ্যে বসবাস তার। অর্থের অভাবে ঘর করতে না পারায় বর্ষা-শীতে কষ্ট হতো তার। এখন প্রধানমন্ত্রীর ঘরে থাকবেন, আর কষ্ট পেতে হবে না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য অনেক দোওয়া করেছেন তিনি। তিনি বলেন,‘ভাঙ্গা ঘরোত পানি পড়ে, আইতোত নিন হয়না। এলা ঘর পাইছি, সুখোত আছি।’
ওই ঘর পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন, বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষণপুর দোলাপাড়া গ্রামের করিম উদ্দিন (৫০)। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ের মত কাজ করেছেন। তাঁর দেওয়া ঘরে আমরা পরিবার নিয়ে নিজের মতো করে বসবাস করবো এর চেয়ে খুশি আর কি হতে পারে !’ একই ইউনিয়নের বাড়াইশাল শেখ পাড়া গ্রামের বাক প্রতিবন্ধি মোতালেব (৪৫) তার ইশারার ভাষায় প্রকাশ করেন আনন্দের অনুভুতি। খাতামধুপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের টিংপাড়া গ্রামের ছপিয়া বেওয়া (৫৫) বলেন, ‘আগোত হামার কোন ঘর আছিল না। এলা হামার জন্য সরকার ঘর বানে দেছে, ওই ঘরোত এলা ঘুমাইম। কতো যে সুখ হইবে মুই ভাবিবার পারেছ না!’
একইভাবে আনন্দ প্রকাশ করেন বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী গ্রামের হরসাধু মোহন্ত (৬০) কামারপুকুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দলুয়া গ্রামের শ্রী ভবেশ চন্দ্র রায়সহ (৫৫) অনেকে। তারা বলেন, ‘ঘর তুলিবার জায়গা আছে, কিন্তু হামেরা টাকার অভাবে ঘর বানেবার (তৈরী) পারেছিনা। ঘরের অভাবোত ঝড়িপানির দিনোত এত্তি ওত্তি আইত (রাত) কাটাছি। হামারলার দুঃখের কাথা (কথা) ভাবিয়া এলা প্রধানমন্ত্রী হামাক ঘর দান করেছে। শ্যাখের বেটির মতন প্রধানমন্ত্রী হামেরা আর কোনঠে পামো বাহে।’
ঘর নির্মাণ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। দ্রুত সমাপ্ত করে তালিকাভুক্ত পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) পরিমল কুমার সরকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক এই কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রকৃত গৃহহীনদের তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। ইতিমধ্যে গৃহ নির্মাণের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঘর প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে সমাজের অবহেলিত মানুষগুলোর সামাজিক মূল্যায়ন বৃদ্ধিসহ প্রাত্যাহিক জীবনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে।