বাসস ক্রীড়া-৮ : ৯ বছর পর শিরোপা চায় মালদ্বীপ, শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুন্ন রাখতে চায় ভারত

151

বাসস ক্রীড়া-৮
ফুটবল-সাফ-ফাইনাল প্রিভিউ
৯ বছর পর শিরোপা চায় মালদ্বীপ, শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুন্ন রাখতে চায় ভারত
ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ (বাসস) : সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের গত এগারটি আসরের মধ্যে সাতটিতেই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার বিশ^কাপ খ্যাত এ ফটুবল আসরে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের জন্য এখন আর জাতীয় দল নিয়ে লড়াই করে না তারা। অনূর্ধ্ব-২৩ দল দিয়েই শিরোপা জয় করে নিয়ে যায় প্রতি বছর।
দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের ফুটবল শক্তিটা এমন এক পর্যায় নিয়ে গেছে যে, সাফের শিরোপা জয় করাটা এখন ভারতের কাছে এখন রুটিন কাজে পরিণত হয়েছে। এবারো কোচ ষ্টিফেন কন্সটেন্টিন ঢাকায় এসেছেন অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে। যে দলে আবার অনূর্ধ্ব-২০ দলের চারজন নবীন ফুটবলারও আছেন। এমন একটি দল নিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেই ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে ভারত। আগামীকাল শনিবার শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে পুরনো প্রতিপক্ষ মালদ্বীপের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে ষ্টিফেনের শিষ্যরা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হবে ম্যাচটি। ভারতের এটি অষ্টম সাফ শিরোপা জয়ের মিশন। অন্যদিকে, মালদ্বীপের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের সুযোগ।
সাফের শিরোপ অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় কোচ ষ্টিফেন। আজ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছেলেরা কঠিন পরিশ্রম করেছে। সেমি-ফাইনালেও ভাল খেলেছে। এখন ফাইনাল জয়ের ভাল একটি সুযোগ সৃস্টি হয়েছে। যেহেতু ভাল খেলেই ফাইনালে উঠেছি, তাই আমরাই জয়ের মাধ্যমে শিরোপার অন্যতম দাবীদার।
ইতোমধ্যে আমরা গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপকে হারিয়েছি। তাই মানষিক দিক থেকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। যদিও এটি ফাইনাল ম্যাচ। এখানে যে কোন কিছুই ঘটতে পারে। তারপরও জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
তিনি জানান ভারতে এই মুহুর্তে ৩৮জনেরও বেশী খেলোয়াড় রয়েছে যারা আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যেই ভারত অনুর্ধ-২৩ দলকে পাঠিয়েছে। ভারতীয় ফুটবলের উন্নয়নের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপুর্ন।
দলীয় অধিনায়ক সুভাশিষ বোস বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভাল। লক্ষ্য থাকবে ফাইনালে জয় করার। সেরাটা খেলেই আমরা ফাইনালে জয় পেতে চাই।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের নেতৃত্বে থাকলে দায় দায়িত্ব নিতে হয়। তবে এখানে এসে দর্শকদের সমর্থন পেয়ে আমরা খুশি। তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রত্যাশা থকবে ফাইনাল ম্যাচে আরো বেশী দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়ে আমাদের সমর্থন দেবে। এতে আমাদের অনুপ্রেরনা আরো বাড়বে।’
অন্য দিকে দীর্ঘ ৯ বছর পর প্রথম ফাইনালে খেরার সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় মালদ্বীপও। দলীয় কোচ পিটার সেগার্ট বলেন,‘ ফাইনালে খেলতে পেরে আমরা খুশি। আমি নেপালের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল ম্যাচের আগেই বলেছিলাম, আমরা নানা মুখি প্রস্তুতি নিয়েছি। নিজেদের লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছিলাম। খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্সে আমি খুশি।
আগামী কালও (ফাইনালে) আমরা বড় দলের বিপক্ষে বড় ম্যাচ উপহার দিতে চাই। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে ভারত আমাদের চেয়ে অনেক বড়। কিন্তু মাঠে খেলবে ১১ জন ফুটবলার। আমাদের দলেরও ১১ জন ফুটবলার তাদের মোকাবেলা করবে। সুতরাং এখানে ভয়ের কিছু নেই। ভারত অবশ্যই সমীহ পাবার মত দল। তবে আমরাও প্রস্তুত। ১০ বছর পর আমরা ফের শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরতে চাই।’ কাল বড় একটি ‘সেনসেশন’ অপেক্ষা করছে’ বলেও জানিয়েছেন মালদ্বীপের কোচ।
দলটির অধিনায়ক আকরাম ঘানি বলেন,‘ দীর্ঘ ৯ বছর ধরে আমরা এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলিনা। তাই ভারতীয় দলের বিপক্ষে এটি আমাদের জন্য বড় সুযোগ। কাল জয়ের মাধ্যমে স্বপ্ন পুরনের জন্য আমরা আপ্রান চেস্টা করব। ইতোমধ্যে শক্তিশালী নেপালকে হারিয়ে আমরা যোগ্যতার প্রমান দিয়েছি। আশা করি কালও ভাল একটি ম্যাচ উপহার দেব।’
চলতি এ আসরে যে সাতটি দল অংশ নিয়েছে, তাদের মধ্যে ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ভারত এখন সবচেয়ে এগিয়ে। তাদের অবস্থান ৯৬ নম্বরে। আর মালদ্বীপ আছে ১৫০তম স্থানে। দু’দলের মুখোমুখি লড়াইয়েও পাল্লাটা ভারী ভারতের দিকেই। ১৬ ম্যাচের মধ্যে ১২ ম্যাচেই জয় আছে সাফের সাতবারের চ্যাম্পিয়নদের। দু’টি ম্যাচে জয় পেয়েছে কেবল মালদ্বীপ। আর দু’টি ম্যাচ ছিল ড্র। পরিসংখ্যান আর র‌্যাংকিং, সবদিক দিয়েই বেশ এগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল পরাশক্তি ভারত। তাছাড়া চলতি এ আসরেও ভারত এখনো পর্যন্ত অপরাজিত। গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকা ও মালদ্বীপকে সমান ২-০ গোলে হারানোর সুখ স্মৃতিও আছে দলটির। আর সেমি ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তানকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দেয়ার পর পুরো টিমই এখন উজ্জিবীত। মালদ্বীপের বিরুদ্ধে কাল জয় পেলেই অষ্টমবারের মতো সাফের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের কৃতিত্ব দেখাবে ভারত।
বাসস/এএসজি/এমএইচসি/১৭৫০/স্বব