একুশে আগস্ট মামলায় আইনী পয়েন্টে রাষ্ট্রপক্ষ আগামীকালও যুক্তি পেশ করবে

179

ঢাকা, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ আইনি পয়েন্টে আগামীকালও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। এরপর ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ আইনী পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেছে। এর আগে টানা ৮৯ কার্যদিবস মামলায় ৪৫ আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করেছে আসামীপক্ষ। আগামীকাল ১০ সেপ্টেম্বর, পরদিন ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর মামলার তারিখ ধার্য রয়েছে।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে একুশে আগস্টের ঘটনায় আনা পৃথক মামলায় একই সঙ্গে বিচার চলছে।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কোসুঁলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ২১ আগস্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার একেবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এ মামলা বিচার ও নিস্পত্তি হবে। সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, এ মামলার ১১৪ দিন যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে টানা ৮৯ কার্যদিবস আসামীপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ করছে। এরআগে রাষ্ট্রপক্ষ ২৫ কার্যদিবস ফ্যাক্টস্ এর আলোকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে। এখন আইনি পয়েণ্টে যুক্তিতর্ক পেশ করছে।
২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামীর সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামীর অন্য মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ৩ আসামী হলেন- জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামীর বিচার চলছে। এর মধ্যে এখনো ১৮ জন পলাতক।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষে সাক্ষিদের জেরা করেছে। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
বিচারের মুখোমুখি থাকা ৪৯ আসামির মধ্যে জামিনে রয়েছেন- বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম। মামলার আসামী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমান।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।