বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : মুজিববর্ষে দেশের সকল গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত প্রধানমন্ত্রীর

1776

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-আশ্রয়ন প্রকল্প-ভাষণ
মুজিববর্ষে দেশের সকল গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূমিহীনদের জন্য খাসজমি বন্টনে জাতির পিতার শুরু করে যাওয়া ‘গুচ্ছগ্রাম’ প্রকল্পের পদাংক অনুসরণ করেই ’৯৬ সালে সরকারে আসার পর তাঁর সরকার ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বিতরণ এবং গৃহহীন-ভূমিহীনকে ঘর করে দেয়ার ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের শুরু করে।
তিনি বলেন, সে সময়ই তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে গৃহহীন তহবিল নামে একটি তহবিলও গঠন করেন। এ তহবিল থেকে এনজিওগুলোকে ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ঋণ দেয়া হতো যাতে যাদের ভিটে আছে তাদের একটি ঘর করে দিতো। এই শর্তে যে, তারা ৫ শতাংশের বেশি উপকারভোগীদের কাছ থেকে নিতে পারবেন না এবং সেভাবেও প্রায় ২৮ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়।
তিনি বলেন, ঘুুর্ণিঝড় বিধবস্থ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের এক নেতার সহযোগিতায় তাঁর প্রদত্ত জমি দিয়েই নৌবাহিনীর তত্বাবধানে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৭০টি পরিবারকে প্রথম পুনর্বাসন করে তাঁর সরকার। যদিও তখন দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল ছিলনা।
কেননা ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে এদেশে কেবল লুটপাটের রাজনীতিই করে গেছে কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই করেনি, বলেন তিনি।
সরকার প্রধান বলেন, ‘ঐ সীমিত সম্পদ দিয়েই আমরা ভূমিহীন-গৃহহীন, ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসিত করার কাজটা শুরু করি এবং এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ লাখের কাছাকাছি ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে আমরা ঘর প্রদান করতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিকভাবেই দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারে এসেই তাঁদের প্রচেষ্টা ছিল অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে আরো স্বাবলম্বী করা। যে কারণে তাঁর সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর বাস্তবায়ন শুরু করে এবং ’৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারে ক্ষতিগ্রস্থদের কক্সবাজারেরই একটি জায়গা ‘খুরুশকুল’ এ বহুতল ভবন নির্মাণ করে পুনর্বাসন শুরু করে। পাশাপাশি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং নদীর ভাঙ্গনে নি:স্ব হয়ে যাওয়া লোকজনকে খুঁজে বের করে তাঁদের ঘর-বাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, অর্থনৈতিক নীতিমালায় আমরা তৃণমূলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমরা গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া, তাদের খাদ্য, শিক্ষা ও বাসস্থান নিশ্চিত করা এবং তৃণমূল মানুষের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথাও কেউ গৃহহীন থাকলে আমাদের জানাবেন। আমরা তাদের বাড়ি করে দেব। আমি মনে করি- এতোটুকু করতে পারলে আবার বাবার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) আত্মা শান্তি পাবে।
তিনি বলেন, আমি পুরো বাংলাদেশ ঘুরেছি, গ্রাম-গঞ্জে, মাঠে-ঘাটে। কোথায় কী সমস্যা জানি। আওয়ামী লীগ অধিকার নিয়ে কাজ করে। জাতির পিতা মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
উপকারভোগীদের সঙ্গে কথপোকথনে মৌলভীবাজারের কালাপুর ইউনিয়নের মাইজদিহি গ্রামের বীরাঙ্গনা বয়োজেষ্ঠ্য নারী শিলা গুহ সহ বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীর নিকট ভিডিও কনফারেন্সে নিজস্ব অভিব্যক্তি তুলে ধরেন।
বীরাঙ্গনা শিলা গুহ বলেন, ‘আমি ঘর পেয়ে খুবই খুশি। আগে রাস্তার ভিখারি ছিলাম, এখন আমি লাখপতি। শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য আমি এ পর্যায়ে আসতে পেরেছি। ভগবান আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) দীর্ঘজীবী করুন।’
অশ্রসিক্ত নয়নে তিনি বলেন, ‘আমি যুদ্ধের সময়ও ভাবতে পারিনি যে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধ বয়সেও আমাকে দেখে রাখবে। তাই আমি ভীষণ ভীষণ খুশি হয়েছি তার প্রতি।’
নতুন বাসগৃহে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানালে প্রধানমন্ত্রী সাদরে সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্ত থেকে কুড়িগ্রামের সদর, শেরপুরের ঝিনাইগাতি, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও সুবিধাভোগীরা সরাসরি যুক্ত ছিলেন। এছাড়া দেশের আরও ৪৫৫টি উপজেলা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিল।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৭০৫/-শআ