ইউরো ২০২০: ইংল্যান্ডকে রুখে দিল স্কটল্যান্ড

1966

লন্ডন, ১৯ জুন, ২০২১ (বাসস) : টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ডকে শেষ ১৬ নিশ্চিত করতে দেয়নি স্কটল্যান্ড। শুক্রবার ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিবেশী স্কটল্যান্ডের সাথে গোলশুন্য ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে ইংলিশরা। আর এতেই নক আউট পর্বের সুযোগ আপাতত থমকে গেছে।
ওয়েম্বলীর ম্যাচটিতে পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাতে পারলেই গ্রুপ-ডি’র দুই ম্যাচে শতভাগ জয় নিয়ে গ্যারেথ সাউথগেটের দলের শেষ ১৬ নিশ্চিত হতে পারতো। কিন্তু অনেকটাই সাদামাটা পারফরমেন্স দেখানো ইংল্যান্ড স্কটল্যান্ডের পোস্টে পুরো ম্যাচে মাত্র একটি ভাল শট করতে পেরেছিল, কিন্তু সেটাও কাঙ্খিত ফল এনে দিতে পারেনি। বিপরীতে স্কটল্যান্ড অনেকটাই আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছে। এক সময় মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডের কাছ থেকে হয়তবা ম্যাচ জয়ী তিন পয়েন্ট ছিনিয়েই নিচ্ছে স্কটিশরা।
মঙ্গলবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে এই মুহূর্তে টেবিলের শীর্ষে থাকা চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে হার এড়াতে পারলে ইংল্যান্ডের শেষ ১৬’র পথ নিশ্চিত হবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইংল্যান্ডের বর্তমান সংগ্রহ চেক প্রজাতন্ত্রের সমান চার পয়েন্ট।
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মত বড় কোন টুর্নামেন্টে খেলতে আসা স্কটল্যান্ড চেকদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু গতকাল অনেকটা লড়াকু দল হিসেবেই ইংল্যান্ডের কাছ থেকে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে স্কটিশরা। এই এক পয়েন্ট অন্তত স্কটল্যান্ডের প্রাপ্য ছিল। এক পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকা ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিততে পারলে স্কটল্যান্ডের সামনেও সুযোগ থাকবে নক আউট পর্বে যাবার।
মধ্যমাঠ থেকে এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের দুটি ম্যাচের কোনটিতেই ইংল্যান্ডকে ভাল কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি সাউথগেটের দলের এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। তার উপর হ্যারি কেনের টানা দুই ম্যাচে ব্যর্থতা ইংলিশদের এগিয়ে যেতে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একের পর এক ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক কেনকে ৭৫ মিনিটে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিয়েছিলেন সাউথগেট। রোববার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১-০ গোলে জয়ী হয়েছিল ইংল্যান্ড ঐ ম্যাচেও কেনের ব্যর্থতা বেশ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। কেনকে বাদ দেয়ার মত কঠিন একটি সিদ্ধান্ত নিতেও হিমশিম খাচ্ছেন ইংলিশ বস। প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে মৌসুম শেষ করা এই টটেনহ্যামের স্ট্রাইকারের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় এখন ইংলিশ শিবির।
২৫ বছর ৩১ দিনের গড় বয়স নিয়ে সাজানো ইংল্যান্ডের মূল একাদশ বড় কোন টুর্নামেন্টে এই প্রথম এত কম বয়সী খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের মধ্যে থাকা দলের অন্যতম সিনিয়র খেলোয়াড় কেন নিজেকে প্রমানে ব্যর্থ হচ্ছেন।
৯৬ ইউরোর পর প্রথমবারের মত বড় টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়া স্কটল্যান্ড তুলনামূলক ভাল পারফর্ম করেছে। পুরো ম্যাচে ওয়েম্বলীতে উপস্থিত আড়াই হাজার স্কটিশ সমর্থক জাতীয় দলকে অনুপ্রেরনা যুগিয়েছে। ১৮৭২ সাল থেকে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী এই দল এনিয়ে ১১৫তম ম্যাচে মোকাবেলা করলো।
খেলার শুরুতে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম সুযোগটা অবশ্য পেয়েছিল ইংলিশরাই। তবে ম্যাসন মাউন্টের কর্নারে হেড নিলেও তা জালে জড়াতে পারেননি জন স্টোনস। ইংল্যান্ডের ব্যর্থতার সুযোগে এরপর ধীরে ধীরে গুছিয়ে ওঠতে থাকে স্কটল্যান্ড। এতে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে স্কটিশদের। চেলসি তরুন মিডফিল্ডার বিলি গিলমোরের কাল স্কটল্যান্ডের হয়ে মূল একাদশে অভিষেক হয়েছে। মধ্যমাঠে তার সপ্রতিভ পারফরমেন্স বারবারই ইংলিশ রক্ষনভাগকে ব্যস্ত করে তুলেছিল।
কিয়েরান টিয়ানির ক্রস থেকে ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড স্টিফেন ও’ডোনেলের শট ঠেকিয়ে দেন এবং বিরতির পর লিন্ডন ডাইকসের দুর্দান্ত শট গোললাইন থেকে ফেরান ইংলিশ ডিফেন্ডার জেমস। কেনের সহায়তা রেসে জেমস ভাল একটি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি।