উত্তরায় অস্ত্রসহ মাদক আইস সিন্ডিকেটের ৬ জন গ্রেফতার

1092

ঢাকা, ১৮ জুন, ২০২১ (বাসস) : রাজধানীর উত্তরা থেকে অস্ত্রসহ মাদক আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম মূল হোতা তৌফিকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, এ চক্রটি উত্তরায় একটি বাইং হাউজের নামে বাসা ভাড়া করে গোপনে মাদক বিক্রি ও সেবন এবং অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
অভিযানকালে আইস, ইয়াবা, বিদেশী মদ, গাজা এবং ১৩টি বিদেশী অস্ত্র এবং রেপলিকা অস্ত্র ও অন্যান্য ইলেকট্রিক শক যন্ত্র ও বিপুল পরিমাণ মাদক সেবনের সরঞ্জামাদিসহ ল্যাবরেটরি (মেথ ল্যাব) সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব-৩ এর এএসপি (মিডিয়া) বীনা রানী দাস আজ শুক্রবার বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এবিষয়ে আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং’র পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত জানান।
এতে র‌্যাবের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খন্দকার আল মঈন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, একটি চক্র ‘মেথ ল্যাব’ তৈরি করে ভেজাল আইস, ইয়াবার রং পরিবর্তন, ঝাক্কি মিক্স ওরফে ঝাক্কি ওরফে ককটেল মাদক তৈরি করছে।
র‌্যাব-৩ এর একটি দল গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম মূল হোতা মো. তৌফিক হোসাইন (৩৫) সহ তার ছয়জনকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এ অভিযান শুরু হয়, তা ভোর পর্যন্ত চলে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. তৌফিক হোসাইন (৩৫) মো. জামিরুল চৌধুরী ওরফে জুবেইন (৩৭), মো. আরাফাত আবেদীন ওরফে রুদ্র (৩৫), মো. রাকিব বাসার খান (৩০), মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে সবুজ (২৭), ও মো. খালেদ ইকবাল(৩৫)।
এই সংঘবদ্ধ চক্রটি সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরায় একটি ‘মেথ ল্যাব’ তৈরির চেষ্টা করছিল। সেখানে তারা আইস ও ইয়াবার পরীক্ষামূলক বিভিন্ন কার্র্যক্রম পরিচালনা করছিল।
র‌্যাবের মূখপাএ কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, তারা বাজার থেকে বিভিন্ন ঔষধ ও কেমিক্যাল মাদকের সাথে মিশ্রণ করতো। এছাড়া তারা পাতন পদ্ধতি ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে আইসের পরিমাণ বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাকি দিতে ইয়াবার রং পরিবর্তন এবং “ঝাক্কি” তৈরি করত।
‘ঝাক্কি’ তৈরিতে তারা তরল পানীর সাথে ইয়াবা, ঘুমের ঔষুধ ও অন্যান্য নেশাজাতীয় ঔষধের তরল মিশ্রণ ব্যবহার করত।
ভেজাল ও পরিশুদ্ধ উভয় প্রকার আইস সরবরাহ ও নিজেরাও তা সেবন করতো।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, এ মাদক ব্যবসার মূলহোতা ও সমন্বয়কারী তৌফিক। অর্থ যোগানদাতা জুবেইন ও খালেদ। রুদ্র কেমিষ্ট হিসেবে ‘মেথ ল্যাব’ পরিচালনা করতো। সবুজ সংগ্রহ সরবরাহকারী এবং তৌফিকসহ বাকিরা সকলেই মাদক বিপণনের সাথে জড়িত ছিল। এ চক্রে আরও ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেফতারকৃত জুবেইন লন্ডন থেকে বিবিএ, তৌফিক বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ, খালেদ বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ, রুদ্র ও সাইফুল এইচএসসি পাশ করার পর ড্রপ আউট এবং খালেদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
তিনি আরও বলেন, চক্রটি টেকনাফ, মিরপুর, গুলশান-বনানীর বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে আইস সংগ্রহ করে সেগুলো তাদের সার্কেলে সরবরাহ করতেন।
আটক জোবেইনের এইম গেমিংয়ের নেশা ছিল। মাদকাসক্তের পর তারা এই অস্ত্র দিয়ে এইম গেমিংয়ের নামে জুয়াও খেলতেন। এছাড়া যারা মাদক গ্রহণের জন্য আসতো তাদের ভয়ভীতি পরিদর্শনের জন্য ব্যবহার করা হতো।
রুদ্রের নামে ৩টি মাদক মামলা এবং জুবেইন এর নামে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।