মৎস্য খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে : শ ম রেজাউল করিম

266

ঢাকা, ১৭ জুন, ২০২১ (বাসস) : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশের মৎস্য খাত যাতে বিপন্ন অবস্থায় না পড়ে সেজন্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের যৌক্তিক, বাস্তবানুগ ও বিজ্ঞানসম্মত প্রস্তুতি নিতে হবে। ইতোমধ্যেই ভৌগলিক অবস্থানের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নানা কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে মৎস্য অধিদপ্তর এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘কমিউনিটি বেজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিসারিজ এন্ড অ্যাকোয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রচলিত ও অপ্রচলিত সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণ করে খাবারের সমৃদ্ধিসহ বিদেশে রফতানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার জন্য গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ আহরণ প্রকল্পসহ একাধিক প্রকল্প নেয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রকৃতির প্রতিকূলতা যাতে আমাদের ধ্বংস করে দিতে না পারে, সেজন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য মৎস্য খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এ খাতের সম্প্রসারণ ও গুণগত মানে বিকাশ শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের জন্য প্রয়োজন।” মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোন দায় না থাকলেও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য ছোট ছোট রাষ্ট্র এর কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ভার্চুয়াল লিডার সামিটে বিশ্বকে সমন্বিত ও সমভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য একটি তহবিল রাখার কথাও বলেছেন
এসময় মন্ত্রী জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল আন্তর্জাতিক সংস্থাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে বাংলাদেশের মৎস্য খাতের সম্প্রসারণে কারিগরী সহযোগিতাসহ অন্যান্য বিষয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ তৌফিকুল আরিফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং এফএও-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন। মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা প্রধানগণ, মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, এবং মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকার ৪টি উপজেলায় এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার ৫টি উপজেলায় উল্লেখিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মকর্তা ও চাষি প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা বিনিময়, জলবায়ু সহিষ্ণু মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, কাঁকড়া ও গলদা হ্যাচারি পরিচালনায় পরামর্শ সেবা প্রদান, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় জনসাধারণের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।