প্রস্তাবিত বাজেট বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানমুখী : সরকারি দল

2046

ঢাকা, ১৭ জুন, ২০২১ (বাসস) : জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা আজ বলেছেন, বিনিয়োগ কর্মসংস্থানমুখী প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ আরো উন্নত-সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।
তারা বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে আরো গতি সঞ্চার করতে দেশীয় শিল্প খাতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কর অবকাশ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার এ বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন।
আজ বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন, সরকারি দলের আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, জিল্লুল হাকিম, সলিমুদ্দিন তরফদার, নুরুন ন্নবী চৌধুরী, আ, ক,ম সারোয়ার জাহান, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন, মো. শফিউল ইসলাম, শফিকুল আলম খান, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, আনোয়ারুল আজিম আনার, শাহে আলম, শামসুল আলম দুদু, বেগম লুৎফুন্নেসা খান, জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু, বেগম রওশন আরা মান্নান, নাসরিন জাহান রতœা, বিএনপির হারুনুর রশীদ,তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এবং বিকল্প ধারার আবদুল মান্নান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও শেখ হাসিনার সরকার একটি প্রযুক্তি নির্ভর শিল্পোন্নত, উন্নত-সমৃদ্ধ জাতি গড়তে প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্প, প্রযুক্তিসহ সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে। এটি করোনাকালে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। আর দেশের মানুষের জীবন মান আরো উন্নত হবে।
তারা এ বাজেটকে বাস্তবায়নযোগ্য উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সরকার গত ১২টি বাজেট অত্যন্ত সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন করেছে। এর ধারাবাহিকতায় এ বাজেটও বাস্তবায়নের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলা করে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
তারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত এক যুগে অর্জিত সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনার দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বে সুচিত উন্নয়নের ফসল হিসাবে দেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২২২৭ ডলার উন্নীত হয়েছে, যা পাকিস্তানের চেয়ে দ্বিগুণ, আর ভারতের চেয়ে বেশী। অথচ বিএনপি আমলে এটা ছিল ৫১৩ ডলার। রিজার্ভ ৫০ বিলিয়নের কাছাকাছি, রেমিট্যান্স অতীতোর যে কোন সময়ের তুলনামুলক অনেক বেড়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে তা সুষ্ঠভাবে পৌঁছে দেয়ায় দারিদ্র্যের হার হ্রাসসহ সামাজিক সুরক্ষা খাতের সব সূচকই উর্ধ্বমুখী।
তারা বলেন,স্বাস্থ্য সেবা খাতে ব্যাপক উন্নতির ফলে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। বৈশ্বিক মহামারি সংক্রমনের এ সময়ও সুষ্ঠু স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনার জন্য মানুষ যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। গত ১২ বছরে শেখ হাসিনার সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ায় এ খাতের সকল সূচক বাংলাদেশ প্রতিবেশী সব দেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে।
তবে তারা বলেন, এ বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ। দক্ষতার সাথে এ লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। এজন্য কর প্রশাসনে গতিশীলতা আনতে হবে। এমনিতো কোভিড কালীন এ সময়ে শুধু দেশে নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশে অর্থনৈতিক স্থবিরতা চলছে। এ সময় সম্পদ আহরণ যত বেশী হবে বাজেট বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন তত সহজ হবে।
তারা বাজেট সম্পর্কে বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে বলেন, সব দেশের জন্যই বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং। তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এ সরকার বিগত সব বাজেট সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন করেছে। এবারও সফল হবে।
তারা মহামারি করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন। বিশেষ করে বিশাল আকারের প্রনোদনার কথাও তারা উল্লেখ করেন।
সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে আগামীতেও এটা বজায় থাকবে। এ ধারাবাহিকতায় ঘোষিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।