বাসস দেশ-৩৩ : রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দিয়ে চট্টগ্রামের সাবেক কাউন্সিলরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

101

বাসস দেশ-৩৩
রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দেয়ায়-দুদকের মামলা
রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দিয়ে চট্টগ্রামের সাবেক কাউন্সিলরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চট্টগ্রাম, ১৪ জুন ২০২১ (বাসস) : অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদপত্র দেয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বালিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন সনদ সহকারী সুবর্ণ দত্ত, দালাল মো. সিরাজুল ইসলাম, রোহিঙ্গা নাগরিক মোহাম্মদ ইসমাইল ও তার স্ত্রী অহিদা এবং তার মেয়ে মেহেরজান।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি ভুয়া জাতীয়তা সনদপত্র দেখিয়ে ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে টাকা লেদেনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিক সনদ সত্যায়িত করে পাসপোর্ট আবেদন করেন অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইসমাইল। ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বরে পাসপোর্টের আবেদনকারী রোহিঙ্গা নাগরিক অহিদার পিতা মোহাম্মদ ইসমাইল ও মাতা মেহেরজান প্রকৃত পিতা-মাতা নয়। তারা সবাই মায়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিক এবং সৌদি প্রবাসী।
জাতীয়তা সনদপত্র ও জন্মনিবন্ধন দেওয়ার পর তাদের দুজনের সেই পাসপোর্টের ফরমেও কাউন্সিলর ইসমাইল বালি সত্যায়িত করেন। ওই সময়ে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর দুদকের অভিযানে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিস থেকে দালাল ইসমাইল আটক হন। সেই সময় অহিদা ও তার পিতা পরিচয়দানকারী ইসমাইলকে জালিয়াতির মাধ্যমে পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেন তিনি। একই সাথে অহিদার পিতা ইসমাইল ও মাতা মেহেরজান নন বলেও তদন্তে বের হয়ে আসে। তবে তারা সকলেই রোহিঙ্গা এবং সৌদি প্রবাসী। শুধুমাত্র কাউন্সিলর ইসমাইল বালির দেওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র ও জাতীয়তা সনদপত্রের ওপর ভিত্তি করেই চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার নির্বাচন কর্মকর্তা অহিদাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেন।
আরও জানা যায়, ক্ষমতা অপব্যবহার করে ভুয়া পরিচয়, নাম ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় সনদপত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ বানিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করা ও পাসপোর্ট আবেদন ফরমের উপরে সত্যায়িত করার দায়ে দন্ডবিধি ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইন ৫ (২) ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে ইসমাইল, মেহেরজান ও অহিদা তিনজনই রোহিঙ্গা। তারা এদেশের নাগরিক না হওয়ার সত্ত্বেও দালাল সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে পাথরঘাটা ওয়ার্ড অফিস থেকে নাম ঠিকানা গোপন করে টাকার বিনিময়ে নেওয়া হয়েছে জন্ম নিবন্ধন সনদ ও নাগরিক সনদ। এসব সনদ নিয়ে তারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরস্পর যোগসাজশে মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে এসব সনদ নিতে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করেছে অভিযুক্ত তিনজন। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সবাই পলাতক রয়েছে বলে জানান তিনি।’
বাসস/জিই/কেএস/২০০০/কেকে