বাসস ক্রীড়া-১
ফুটবল-ইউরো ২০২০
তুরস্ককে উড়িয়ে দিয়ে ইতালির শুভ সূচনা
রোম, ১২ জুন, ২০২১ (বাসস) : রোমে ঘরের মাঠে তুরস্ককে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে উড়ন্ত সূচনা করেছে ইতালি। করোনা মহামারী কাটিয়ে এক বছর বিরতির পর অন্তত ইউরোপীয়ান এই সর্বোচ্চ আসর মাঠে গড়াতে পেরেছে এটাই স্বস্তির কথা।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপে খেলতে ব্যর্থ হওয়া আজ্জুরিরা দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার পর বড় কোন টুর্নামেন্ট খেলতে মাঠে নেমেছিল। যদিও মাঠে লড়াইয়ে তাদের এই দীর্ঘ অনুপস্থিতির কোন অস্তিত্বই ধরা পড়েনি। স্তাদিও অলিম্পিকোর অর্ধেক আসনে বসা সমর্থকদের তারা হতাশ করেনি। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর মেরি ডেমিরালের আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে যায় ইতালি। এরপর সিরো ইমোবিলে ও লরেঞ্জো ইনসিগনের গোলে রবার্তো মানচিনির দলের গ্রুপ-এ’র প্রথম ম্যাচে জয় নিশ্চিত হয়।
প্রায় ১৬ হাজার সমর্থক কাল ইতালিয়ান রাজধানীতে ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর মাঠে ফিরতে পেরে কাল সমর্থকদেরও বেশ আবেগী হতে দেখা গেছে।
এ নিয়ে টানা ২৮ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে ইতালি। ম্যাচ শেষে মানচিনি বলেছেন, ‘রোমে ভাল একটি শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি মনে করি এই জয়টা পুরো ইতালির জন্য একটি স্বস্তি এনে দিয়েছে। আজকের এই জয়ে সমর্থকদেরও অনেক সহযোগিতা ছিল। সন্ধ্যাটি দারুন উপভোগ্য ছিল। আশা করছি টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলোতেও এভাবে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।’
এদিকে তুরস্কের কোচ সেনল গুনেস বলেছেন, ‘আমরা অন্য একটি ফলাফলের আশা করছিলাম। কিন্তু ইতালি আজ সব দিক থেকে আধিপত্য দেখিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম গোলটা পুরো ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেয়। এরপর থেকেই আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রন হারাতে শুরু করি।’
এবারই প্রথমবারের মত ২৪টি দল নিয়ে ইউরোপের ১১টি বড় শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ। করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে নতুন জীবনের সাথে মানিয়ে নিতে তাই ইউরোর আয়োজনে কোন কমতি রাখেনি আয়োজকরা। পুরো রোম জুড়েই কাল এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করেছে। ম্যাচ শুরুর আগে আতশবাজি ও মনোমুগ্ধকর লাইট শো সকলকে মুগ্ধ করেছে।
ম্যাচ শুরুর আগে ম্যাচ বলটি স্তাদিও মাঠের মাঝে নিয়ে আসেন ইতালির সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী দুই তারকা আলেহান্দ্রো নেস্তা ও ফ্রান্সেসকো টট্টি।
মাঠের বাইরের এসব মুগ্ধতায় অবশ্য আজ্জুরিরা মাঠে পারফর্ম করতে ভুল করেনি। ইমোবিলের নেতৃত্বে ইতালির আক্রমনভাগ কাল পুরো ম্যাচেই বেশ ব্যস্ত ছিল। ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেছেন। যদিও তুরষ্কের শক্তিশালী রক্ষণভাগের মুখে তাকে বারবার বাঁধা পড়তে হয়েছে। ২৩ মিনিটে গোলরক্ষক উগারকান কাকিরের দারুন এক সেভে রক্ষা পায় তুরষ্ক। ইনসিগনের কর্ণার থেকে ইতালীয় অধিনায়ক গিওর্গিন চিয়েলিনির শক্তিশালী হেড রুখে দেন কাকির।
বিরতির আট মিনিট পর অবশেষে ডেডলক ভাঙ্গে ইতালি। ফেডেরিকো বেরারডির ক্রস থেকে জুভেন্টাস ডিফেন্ডার ডেমিরালের আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে যায ইতালি। পরের মিনিটেই লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলা সুযোগ নষ্ট করেন, ফিরতি বলে ইমোবিলের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৬৬ মিনিটে অবশ্য আর কোন ভুল করেননি ইমোবিলে। স্পিনাজ্জোলার শট কাকির রুখে দিলে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান ইমোবিলে। ইতালির জার্সি গায়ে এটি তার ক্যারিয়ারের ১৪তম গোল। ম্যাচ শেষের ১১ মিনিট আগে ইনসিগনের কার্লিং শটে বড় জয় পায় ইতালি। সাসুলো উইঙ্গার বেরারডি ইতালির তিনটি গোলে বড় ভূমিকা রেখেছেন। এই প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের কোন ম্যাচে ইতালি তিন গোল দিল।
আগামী বুধবার পরবর্তী ম্যাচে রোমে সুইজারল্যান্ডের মোকাবেলা করবে ইতালি। অন্যদিকে ২০০৮ সালের সেমিফাইনালিস্ট তুরস্ক বাকুতে লড়বে ওয়েলসের বিপক্ষে।
বাসস/নীহা/১৫১০/স্বব