চট্টগ্রামে করোনায় ২ জনের মৃত্যু, সংক্রমণ হারও বাড়ছে

163

চট্টগ্রাম, ১২ জুন, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার বাড়ছে। চলতি জুন মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার ছিল গতকাল, ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আরো দুই জনের মৃত্যু হয়, নতুন ১৫৮ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়। করোনামুক্ত হন ৫২১ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ১৫৮ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৯২ জন এবং ১০ উপজেলার ৬৬ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৫৪ হাজার ৭৪০ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৪৩ হাজার ৩৪৫ জন ও গ্রামের ১১ হাজার ৩৯৫ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ৬৬ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ফটিকছড়িতে ২৩ জন, সীতাকু- ও হাটহাজারীতে ১২ জন করে, রাউজানে ৫ জন, মিরসরাইয়ে ৪ জন, বাঁশখালী ও চন্দনাইশে ৩ জন করে, সাতকানিয়ায় ২ জন এবং ভুজপুর ও লোহাগাড়ায় ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় গ্রামের দুই পুরুষ রোগী মারা যান। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৬৪০ জন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫৩ জন শহরের ও ১৮৭ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৫২১ জনকে। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬৩৪ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ৭৩ জন ও ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩৯ হাজার ৫৮৩ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৪০ জন ও ছাড়পত্র নেন ৪৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ১০১ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল সংক্রমণের হার চলতি জুন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়। মাসের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায় ৫ জুন। এদিকে, দুই জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ মাসের প্রথম এগারো দিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৮ জনে পৌঁছেছে। তবে, আক্রান্তের চেয়ে আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩ গুণের বেশি। আইসোলেশনে যাওয়া নতুন রোগীর চেয়ে করোনামুক্তির ছাড়পত্র গ্রহীতা বেশি ছিল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে শহরের ১৭ ও গ্রামের ১৬ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৫ জনসহ ৩০ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৬৭ জনের নমুনায় শহরের ২৫ জন ও গ্রামের ৪০ জন পজিটিভ শনাক্ত হন।
বেসরকারি ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২০২, মা ও শিশু হাসপাতালে ১৬, মেডিকেল সেন্টারে ১০ ও এপিকে ১৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শেভরনে সীতাকু-ের একটিসহ ১৩, মা-শিশু’তে শহরের দু’টি, মেডিকেল সেন্টারে শহরের ৪ টি এবং এপিকে শহরের ৭ টি নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে।
চট্টগ্রামের ৪২ টি নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় বাঁশখালী ও সাতকানিয়ার ২ টি করে ৪ টির পজিটিভ এবং বাকীগুলোর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তবে, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরি (আরটিআরএল), পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ, চমেকে ১৬ দশমিক ৩০, চবি’তে ৩৮ দশমিক ৯২, শেভরনে ৬ দশমিক ৪৩, মা ও শিশু হাসপাতালে ১২ দশমিক ৫০, মেডিকেল সেন্টারে দশমিক ৪০, এপিকে ৪৬ দশমিক ৬৬ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।