বাসস দেশ-১ : লালমাই পাহাড়ের চূড়ায় বিরল উদ্ভিদের সংরক্ষণাগার

96

বাসস দেশ-১
বিরল উদ্ভিদের সংরক্ষণাগার
লালমাই পাহাড়ের চূড়ায় বিরল উদ্ভিদের সংরক্ষণাগার
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ৮ জুন, ২০২১ (বাসস) : জেলার লালমাই পাহাড়ের চূড়ায় সংরক্ষণ করা হয়েছে শতাধিক প্রজাতির বিরল উদ্ভিদ। এ উদ্যানে রোপণ করা হয়েছে বিরল উদ্ভিদের কয়েক লাখ চারা। এটি বাংলাদেশের তৃতীয় বিরল উদ্ভিদ উদ্যান। উদ্যানটি স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ১৭ কোটি টাকা।
উদ্যানটিতে রয়েছে বৈলাম, চম্পা, লোহাকাঠ, স্বর্ণকমুদ, সিভিট, অশোক, চাপালিশ, বহেরা, হরিতকি, তেলশুর, আগর, নাগলিঙ্গম, নাগেশ^র, শাল, মহুয়া, ধূপ, উড়ি আম, বন পেয়ারা, বাঁশপাতা, সাকড়া, চালমুগরা, কাঞ্চন, পিতরাজ, জারুল, কনক, তমাল, রাধাচূড়া, করমচা, অড়বরই, হারগোজা, ডেফল, সুরুজ, ধারমারা, এলামেন্ডা, জুমু জবা, কার্নিভাল কর্ডিলাইন, ডুরান্ডু, কুপিয়া ও কাটামেহেদিসহ শতাধিক প্রজাতির বিরল উদ্ভিদ। এছাড়া রয়েছে অর্কিড ও ক্যাকটাস হাউজ। আছে পাতাবাহার ও ভেষজ উদ্ভিদও।
উদ্যানটিতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এক ডাল থেকে আরেক ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে নানা প্রজাতির পাখি। প্রজাপতি ও মৌমাছিরা খেলা করছে ফুলে ফুলে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে ফুলের ঘ্রাণ। আঁকাবাঁকা পাহাড়ের নির্জনতায় একইসাথে এত প্রজাতির বিরল উদ্ভিদ ও ফুলের সুবাস বিমোহিত করবে যেকোনো দর্শনার্থীকে।
২০১৫ সালে ১৭ একর ভূমির ওপরে শুরু হয় বিরল উদ্ভিদ উদ্যানটির কাজ। ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর এ উদ্যানটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এতে প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও ছাত্রদের জন্য প্রবেশমূল্য ৫টাকা এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৪০০ টাকা। উদ্যানটির ভেতরে আছে পার্ক অফিস। নারী ও পুরুষ পর্যটকদের জন্য আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কুমিল্লা বনবিভাগ কার্যালয় থেকে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় লাগোয়া লালমাই পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপিত এ উদ্যানের আশেপাশে তিনভাগে বনবিভাগের আরও ৩৩ একর জায়গা রয়েছে। বিরল উদ্ভিদ উদ্যান কেন্দ্রটিসহ মোট ৫০ একর জায়গার দখলে আছে কুমিল্লা বনবিভাগ। এটিকে আরও সম্প্রসারিত, পর্যটনমুখী ও বণ্য প্রাণীর অভায়রণ্য করে তুলতে দরকার আরও ৩০ একর জায়গা। মোট ৮০ একর জায়গা হলে একটি পরিকল্পিত দৃষ্টিনন্দন বিরল উদ্ভিদকেন্দ্র ও বন্যপ্রাণির অভায়রণ্য হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন বন কর্মকর্তারা। কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র সজীব বাসসকে জানান, উদ্যানটিতে একাধিকবার গিয়েছি। চমৎকার জায়গা, যাতায়াত ব্যবস্থাও ভালো। আশেপাশে শালবন বৌদ্ধবিহারসহ অনেকগুলো ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা মাফিক কাজ করলে অনায়াসেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারবে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র আবুল বাশার বলেন, কুমিল্লায় এমন উদ্ভিদ উদ্যান গড়ে তোলা দারুণ ব্যাপার। শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য এটা ভালো ক্ষেত্র।
কুমিল্লার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল করিম বাসসকে জানান, উদ্ভিদ উদ্যান কেন্দ্রটি করা হয়েছে এ প্রজন্মকে শেখানোর জন্য। শিক্ষার্থীরা বিলুপ্রায় উদ্ভিদগুলো দেখে জ্ঞানার্জন করবে। তাই তাদের জন্য সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নামমাত্র মূল্যে টিকিট নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১০৫৫/নূসী