বাসস দেশ-৪৯ : মামুনুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে: পুলিশ সুপার

187

বাসস দেশ-৪৯
মামুনুল রিমান্ড-সংবাদ সম্মেলন
মামুনুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে: পুলিশ সুপার
নারায়ণগঞ্জ, ৬ জুন, ২০২১ (বাসস) : হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে এক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক তথ্য প্রমান পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। আজ রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬ মামলায় ১৮ দিনের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের জানান।
অনুষ্ঠিত এ ব্রিফিংয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর জেলা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান, জাহেদ পারভেজ চৌধুরীসহ জেলা সিআইডি ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ’র (ডিবি) কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের উগ্রবাদী নেতারা হেফাজতে ইসলামে একই প্ল্যাটফর্মে এসেছে। ইসলাম কায়েমের কথা বলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া তাদের অভিলাষ ছিলো। মামুনুল হকের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার যে উচ্চাভিলাষ তা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয়েছে। তারপরেও আমরা এ বিষয়গুলি আরো তদন্ত করবো।
তিনি বলেন, ২৮ মার্চ হরতাল ডেকেছিলো হেফাজত ইসলাম। ২৫ মার্চ নেতাকর্মীদের উজ্জিবিত করার উদ্দ্যেশে মামুনুল নারায়ণগঞ্জে এসেছেন। ৩১ মার্চও নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন। হরতালের সময়ে সহিংসতার পেছনে সরাসরি জড়িত ছিলেন মামুনুল হক। তার উসকানীমূলক বক্তব্য নাশকতায় সাহস যুগিয়েছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। তবে সব কিছুই ক্ষতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে।
১৮ দিন রিমান্ডে থাকা মামুনুল হক পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, এসব কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে টাকা আসতো বলেও আমরা তথ্য পেয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামুনুলের সম্পত্তির হিসাব নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।
তিনি জানান, মামুনুলের একাধিক বাড়ি ও মাদ্রাসা রয়েছে। মাদ্রাসার নামে-বেনামে প্রচুর অর্থ এসেছে। কারো কাছ থেকে অনুদান নিলে সে অনুদানের হিসাব রাখার যে আইনগত বাধ্য বাধকতা রয়েছে তদন্তে সেটি আমরা পাইনি। তার ঢাকায় যে বাড়ি রয়েছে বা অন্যান্য সম্পত্তি রয়েছে এসব তৈরীর অর্থ কোথায় সে পেলো এর কোনো সদুত্তর সে দিতে পারেনি।
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম আরো বলেন, কাউকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরিক সম্পর্ক করলে সেটা ধর্ষণের মধ্যে পড়ে। ধর্ষণ মামলার বাদীকে সে বিয়ে না করে শারিরিক সম্পর্ক করেছে এটা সে স্বীকার করেছে।
রিমান্ডে জেলা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল এর আগে জানিয়েছিলো সে কাবিন নামা ও দেনমোহর ছাড়া দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিয়ে করেছে। কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী-ই তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছে।
নারায়ণগঞ্জ পিবিআই’র পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে জানান, ২৮ মার্চের হরতালকে কেন্দ্র করে মামুনুল হক ২৫ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈঠক করে। হেফাজতের নেতাকর্মীদের উস্কে দেয়। আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেসব তথ্য পেয়েছি তার সাথে তার রিমান্ডে দেয়া তথ্য মিলে গেছে।
উল্লেখ্য,গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ঝর্ণা নামের এক নারীসহ স্থানীয়দের হাতে আটক হন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। তাকে ছাড়িয়ে নিতে হেফাজত কর্মীরা ব্যাপক তান্ডব চালায়। পরবর্তিতে ওই নারী সোনারগাঁ থানায় এসে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এসব ঘটনায় দায়েরকৃত ৬টি মামলায় ৩দিন করে মোট ১৮ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে পাঠানো হয়।
বাসস/সংবাদদাতা/এমএমবি/২২২৫/স্বব