বাসস সংসদ-৫ (প্রধানমন্ত্রী) (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলী হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরব কেন : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

118

বাসস সংসদ-৫ (প্রধানমন্ত্রী) (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-শোক প্রস্তাব-ভাষণ-দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি
ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলী হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরব কেন : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে খুনীদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরী দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। কিন্তু তিনি এবং তাঁর বোন শেখ রেহানাকে রিফিউজি হিসেবে বিদেশে অবস্থান করলেও দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বা রেহানা বা ১৫ আগষ্টের অন্য শহিদ পরিবারের সদস্যদের এই হত্যার বিচার চাওয়ার কোন অধিকার ছিলনা। কিন্তু ’৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ সরকার এই ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সটি বাতিল করে। বিলটি সংসদে উত্থাপন করেছিলেন সে সময়ের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু।
সেদিনের অধিবেশনে মতিন খসরু যে জ¦ালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাআজও তাঁর কানে বাজে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মতিন খসরুকে প্রথমে প্রতিমন্ত্রী এবং পর মন্ত্রির দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ আওয়ামী লীগ কর্মী। ছাত্রলীগ, যুবলীগ করা এই মতিন খসরুকে পরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর চলমান অবস্থায় তাঁকে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদে মনোনয়ন দিলেও বেশি ঘোরাঘুরি না করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর মধ্যে জেতার প্রচন্ড আগ্রহ থাকায় সারা বাংলাদেশ তিনি সফর করেন এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।
প্রতিদিন তাঁর স্বাস্থ্যের খবর নিলেও তাঁকে বাঁচানো গেলনা।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আসলামুল হক সম্পর্কে প্রধামন্ত্রী বলেন, তিনিও আমাদের নিবেদিত প্রাণ একজন কর্মী ছিলেন। সকল আন্দোলন-সংগ্রামেই সবসময় অগ্রণী ভ’মিকা নিয়েছেন। খুব জনপ্রিয় ছিলেন । সেকারণে বারবাার নির্বাচিতও হয়েছেন। এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর একটা আলাদা দরদ ছিল। প্রধানমন্ত্রী তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি সারা বেগম কবরী, মেরাজ মোল্লা, সিরাজগঞ্জের আমজাদ হোসেন মিলন, ফরিদা রহমানের মৃত্যুতেও গভীর শোক প্রকাশ করেন। বাংলা একাডেমীর চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান খান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার নিজের লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন- বই প্রকাশে আমরা একসাথে কাজ করেছি। তিনি সহ বেবী মওদুদ আমরা যাঁরা একসঙ্গে কাজ করতাম একে একে সবাইকে হারালাম। জাতির পিতার স্মৃতিকথা বইটির কাজও তিনি অনেকদূর শেষ করে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব বই প্রকাশে শামসুজ্জামান খান সবসময় পরামর্শ দিতেন এবং সংশোধণের কাজটিও নিজহাতে করতেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সংশোধনের জন্য তাঁদের আলাদা আলাদা কলম ছিল, যেমন শামসুজ্জামান সাহেবের ছিল লাল কলম। সেই কলম ব্যবহার তাঁরা যে যখন পারতেন সংশোধনীর কাজ করতেন। এই বইগুলো প্রকাশে তাঁর (শামসুজ্জমান খান)যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শামসুজ্জামান খান বাংলা একাডেমীর উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। একে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলায় তিনি কাজ করে গেছেন।কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজিও বাংলা একাডেমীর জন্য অনেক কাজ করেছেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য পর পর দুজনই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। এটা সত্যিই খুব দু:খজনক। এভাবে আমরা এক একজনকে হারাচ্ছি।
সংসদে ২০২১-২২ সালের বাজেট অধিবেশনের এই সময় শোকপ্রস্তাবে দাঁড়িয়ে কথা বলার জন্য তিনি পুণরায় দু:খ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বিচার চাওয়ার কোন অধিকার ছিলনা। সেই অধিকার আমাদের ফিরিয়ে দিতে মতিন খসরু অনেক কষ্ট করেছেন। মামলা পরিচালনায় দিন রাত যে পরিশ্রম করেছেন সেজন্য তিনিসহ সংশ্লিস্টদের প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি দেখেছি তাঁর ভেতর (মতিন খসরু) সবসময় একটা শক্তি ছিল। কারণ মামলা করা অত সহজ ছিলনা, অনেক বাধা ছিল। কিন্তু তারপরও তিনি দিনরাত পরিশ্রম করেছিলেন। সেকথা আমি সবসময় স্মরণ করি এবং তাঁর জন্য দোয়া করি।
বাসস/এএসজি/এফএন/২১৪০/এবিএইচ