বাসস সংসদ-৫ (প্রধানমন্ত্রী) (প্রথম কিস্তি) : ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলী হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরব কেন : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

121

বাসস সংসদ-৫ (প্রধানমন্ত্রী) (প্রথম কিস্তি)
শেখ হাসিনা-শোক প্রস্তাব-ভাষণ-১ম কিস্তি
ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলী হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরব কেন : সংসদে প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ২ জুন, ২০২১ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলাকে ‘অমানবিক’ আখ্যায়িত করে পুনরায় এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং এই ইস্যুতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কথা না বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘প্যালেষ্টাইনে যে ঘটনা ঘটেছে তা সত্যই অমানবিক। সেই ছোট্ট শিশুর কান্না এবং তাঁদের সেই অসহায়ত্ব, মাতা-পিতা হারিয়ে ঘুরে বেড়ানো- এটা সহ্য করা যায়না।’
তিনি বলেন,‘ যারা মানবতার এত কথা বলেন এ সময় তাদের অনেকেই চুপ কেন, আন্তর্জাতিক বহু সংস্থা এখন আর কথা বলেনা কেন, সেটাই আমার প্রশ্ন। ’
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (২০২১ সালের বাজেট অধিবেশন) অধিবেশনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এবং সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু এবং আসলামুল হক আসলাম সহ ১১ জন সাবেক সংসদ সদস্য এবং কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুতে গৃহীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এ কথা বলেন।
এ সময় স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসরাইল এর আগেও হামলা চালিয়েছে। আমরা এই হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানাই এবং যাঁরা মারা গেছেন তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
তিনি বলেন, এই যে হামলায় ছোট ছোট শিশুরা আহত হচ্ছে, অত্যাচারিত হচ্ছে তাঁদের ওপর এই যে জুলুম এটা সহ্য করা যায়না।
প্রধানমন্ত্রী নির্যাতিত প্যালেষ্টাইনবাসীকে আশ^স্থ করে বলেন,‘যাহোক আমরা আমাদের প্যালেস্টাইনি ভাইদের সঙ্গে সবসময়ই আছি, অতীতেও সবরকমের সহযোগিতা আমরা করেছি, এখনও করছি এবং ভবিষ্যতেও অবশ্যই করে যাব।’
এর আগে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, একেএম রহমতউল্লাহ, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মুজিবুল হক, মো.আলী আশরাফ, সাদেক খান শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
এ ছাড়াও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের, চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং বিএনপি’র সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
পরে সংসদে সর্বসস্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং নিহতদের বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
এরপরেই রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের দিনের অন্যান্য কর্মসূচি স্থগিত করে সংসদ মূলতবী করা হয়। অবশ্য এরআগেই এদিন প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়।
শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে করোনার দ্বিতীয় আঘাত থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করার লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর থেকে একে নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য তাঁর সরকার সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, তবে বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ আবার এই করোনা দেখা দেওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে, আমি সবাইকে বলবো সকলে যেন আমাদের স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলেন। বাংলাদেশের সব মানুষের প্রতি আমার এই একটা আহবান থাকবে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার টিকাদান থেকে শুরু করে সবরকম সুরক্ষার ব্যবস্থা নিলেও নিজেকে নিজের সুরক্ষিত রাখতে হবে।
এদিন যাঁদের মৃত্যুতে সংসদে আরো শোক জানানো হয় তাঁরা হচ্ছেন- সাবেক মন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য ও অভিনেত্রী সারা বেগম কবরী, মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, গাজী এমএম আমজাদ হোসেন, মোহাম্মদ ইউনুস, জিয়াউর রহমান খান, আব্দুল বারী সর্দার, দিলদার হোসেন সেলিম, আব্দুর রউফ খান ও ফরিদা রহমান, সাবেক গণপরিষদ সদস্য খন্দকার আব্দুল মালেক শহীদুল্লাহ এবং আবুল হাশেম।
চলবে/বাসস/এএসজি-এফএন/২১৩০/-শআ