কর্ণফুলীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা না গেলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সুফল মিলবে না : চসিক মেয়র

268

চট্টগ্রাম, ১ জুন ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, মহানগরে পুরোনো যে খালগুলো ছিল তার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে সমন্বিত্বভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সাথে সাথে কর্ণফুলী নদীর হারানো নাব্যতা ফিরিয়ে আনা না গেলে যত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক কেন জলাবদ্ধতা নিরসনে সত্যিকার সুফল পাওয়া যাবে না।
মেয়র আজ দুপুরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের আমন্ত্রণে সৌজন্য সাক্ষাতে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্ষার ভরা মৌসুমের আগেই ঈদের দিন সকালে এক ঘণ্টার ভারি বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার চিরচেনা রূপ ফুটে উঠে। নগরীর চাক্তাই খালসহ বিভিন্ন খালে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কিছু বাঁধ দেয়ায় জলপ্রবাহের পথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে এই খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি দ্রুত সরতে পারেনি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার আন্তরিকতা থাকলেও কাক্সিক্ষত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি। নগরবাসী বোঝেন এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন একটি বড় স্বপ্ন পূরণের মাইলফলক। বড় যে কোন কাজে সাময়িক কিছু সমস্যাকে মেনে নিতে হয় এবং এটাই বাস্তবতা। তবুও নগরবাসীর সকল ভাল-মন্দের মালিক ও দায়-দায়িত্ব মেয়রের, এটাই একটি সাধারণ ধারণা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে নগরীর সামগ্রিক কার্যক্রমের সাথে অনেক সেবা সংস্থা যুক্ত। তাই সব দায়িত্ব মেয়রের একার নয়। এখানে সমন্বয় প্রয়োজন।
সাক্ষাতকালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে যে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজটি সেনাবাহিনীকে না দিলে এটি আরো কঠিন হতো। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে চসিক আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডে যে বক্স কালভার্ট নির্মাণ করেছিল সে কালভার্টটি সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে গেছে। বক্স কালভার্টটি কি কৌশলে পরিষ্কার করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা নিতে তিনি মেয়রকে অনুরোধ জানান। এছাড়া মেগা প্রকল্পের যে কাজগুলো ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সিটি কর্পোরেশনকে এ সবের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন।
চিটিগাং চেম্বার অব কমার্স’র সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের প্রতি আন্তরিক হয়ে মেগা প্রকল্পে বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ দিলেও কাজের অগ্রগতি এখনো দৃশ্যমান হচ্ছে না। প্রকল্প কাজের সুবিধার্থে চাক্তাই খালে বাঁধ দেয়ার ফলে সামনের বর্ষা মৌসুমে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ এলাকা পানিতে সয়লাব হয়ে যাবে। এ কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা শংকিত। তিনি আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তা নিয়ে এখনই বাস্তব সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ জানান। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে তাদের প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা কি পর্যায়ে তার ধারণা দেয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করারও অনুরোধ জানান চেম্বার সভাপতি।
সাক্ষাত অনুষ্ঠানে আলোচনার প্রারম্ভে প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রকল্পের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে বলেন, মেগা প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে কিছু কিছু জায়গায় বাঁধ দেয়া হয়েছে। এই বাঁধগুলো অপসারণ এবং বিকল্প কি ধরণের ব্যবস্থা করা যায় তা মাথায় রেখে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। চউকের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি চসিকের সহযোগিতা কামনা করেন।