বাসস দেশ-৪০ : রাজধানীতে উদ্ধারকৃত টুকরো লাশটি ময়না মিয়ার : তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী গ্রেফতার

168

বাসস দেশ-৪০
ডিএমপি-গ্রেফতার
রাজধানীতে উদ্ধারকৃত টুকরো লাশটি ময়না মিয়ার : তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী গ্রেফতার
ঢাকা, ১ জুন, ২০২১ (বাসস): রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও বনানী এলাকা থেকে উদ্ধারকৃত টুকরো লাশটি ভিকটিম ময়না মিয়ার। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভিকটিম ময়না মিয়ার প্রথম পক্ষের স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতকে আজ আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ফাতেমা খাতুনের দেখানো স্থান অনুসন্ধান করে ভিকটিমের রক্তমাখা জামাকাপড়, বোরখা, ধারালো ছুরি, দা, বিষাক্ত পেয়ালা, শীল পাটা ও খন্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়। সোমবার রাজধানীর বনানী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফাতেমাকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের আমতলী এলাকায় একটা নীল রঙের ড্রামের মধ্যে একজনের মস্তকবিহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই রাত ১১টার পর মহাখালী বাস টার্মিনালের এনা কাউন্টারের কাছে একটা ব্যাগের মধ্যে থেকে খন্ডিত দু’টি পা এবং কাঁধ থেকে খন্ডিত দু’টি হাতের অংশ উদ্ধার করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে ডিএমপি’র যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, রোববার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও বনানী এলাকা থেকে ভিকটিম ময়না মিয়ার খন্ডিত লাশ পাওয়া যায়। ভিকটিমের দু’টি পা এবং দু’টি হাতের খন্ডিত অংশ পাওয়া যায় মহাখালী বাস টার্মিনালের এনা কাউন্টারের সামনে এবং শরীরের বাকী অংশ পাওয়া যায় বনানীতে। এরপর বনানী লেক থেকে ডুবুরি দিয়ে ভিকটিমের মাথা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত ফাতেমা খাতুন থাকতেন কড়াইল বস্তিতে। সেখানে স্বামী স্ত্রীর অমিল, উপার্জিত টাকা পয়সা নষ্ট ও একাধিক বিবাহকে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সাথে তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী ফাতেমার মনোমালিন্য হয়। ফাতেমা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে হত্যা করেন। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যাকান্ডের একমাত্র আসামি ভিকটিমের প্রথম স্ত্রী ফাতেমাকে গ্রেফতার করা হয়।
গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, গত ২৩ মে থেকে ফাতেমার স্বামী ময়না মিয়া কড়াইল এলাকায় তার বাসাতেই অবস্থান করছিলেন। ফাতেমা পরিকল্পনা করে তার স্বামীকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে নিস্তেজ করেন এবং পরবর্তীতে গলা কেটে তার খন্ডিত লাশ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখেন।
ফাতেমা দুই পাতা ঘুমের ট্যাবলেট কিনে শুক্রবার রাতে জুসের সঙ্গে স্বামীকে খাইয়ে দেন। সারারাত ও পরের সারাদিন তার স্বামী ঘুমে অচেতন থাকার পর সন্ধ্যার দিকে ফাতেমা তার ওড়না দিয়ে স্বামীর দু’হাত শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখেন এবং তার মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেন। এরপর তার বুকের উপরে বসে নতুন ধারালো স্টিলের চাকু দিয়ে স্বামীর গলা কেটে লাশ টুকরো করেন। পরের দিন সকালে ফাতেমা লাশ গুম করার জন্য ধারালো চাকু দিয়ে ময়না মিয়ার হাত ও পা দেহ থেকে আলাদা করে খন্ডিত অংশ তিন ভাগে রাখেন।
তিনি আরও বলেন, ফাতেমা একটি লাল রঙের কাপড়েরর ব্যাগে মাথা, শরীরের মূল অংশকে একটি নীল রঙের পানির ড্রামে এবং খন্ডিত দুই পা ও দুই হাতকে একটি বড় কাপড়ের ব্যাগে রাখেন । এরপর রিকশা ভাড়া করে প্রথমে আমতলী এলাকায় শরীরের মূল অংশ ফেলে দেন, পরবর্তীতে মহাখালী এনা বাস কাউন্টারের সামনে খন্ডিত দু’হাত, দু’পা ভর্তি ব্যাগ রেখে দিয়ে চলে আসেন বাসায়। পরে ফাতেমা খন্ডিত মাথাটি বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পূর্ব পাশে গুলশান লেকে ফেলে দিয়ে বাসায় ফিরে যান। এ ব্যাপারে বনানী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
বাসস/সবি/এফএইচ/২০৫৫/-শআ