বাসস ক্রীড়া-৪ : চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পর তোপের মুখে পর্তুগাল সরকার

109

বাসস ক্রীড়া-৪
ফুটবল-পর্তুগাল
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পর তোপের মুখে পর্তুগাল সরকার
পোর্তো, ১ জুন ২০২১ (বাসস) : চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পর পোর্তো শহরের রাস্তায় করোনা ভাইরাস বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে হাজারখানেক ইংলিশ সমর্থকের উল্লাস করার ঘটনায় দেশটির বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিকদের তোপের মুখে পড়েছে পর্তুগাল সরকার। এ ব্যপারে তারা দেশটির সরকারের কাছে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ অমান্য করার বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করে বার্তা পাঠিয়েছে।
শনিবার চেলসি বনাম ম্যানচেস্টার সিটির ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নেমেছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আসরে। কোভিড সতর্কতায় ম্যাচের ভেন্যু শেষ মুহূর্তে তুরষ্কের ইস্তাম্বুল থেকে সড়িয়ে পোর্তোতে নির্ধারিত হয়। এই ম্যাচে পোর্তোর স্টেডিয়ামে সাড়ে ১৬ হাজার দর্শক প্রবেশের অনুমতি ছিল। ম্যাচটি যেহেতু ছিল অল-ইংল্যান্ড ফাইনাল, সে কারনেই স্টেডিয়াম জুড়ে ছিল ইংলিশ সমর্থকদের প্রাধান্য। চেলসির শিরোপা নিশ্চিতের সাথে সাথে প্রিয় ক্লাবের জয় উদযাপনে ইংলিশ সমর্থকরা পোর্তোর রাস্তায় নেমে আসে, তাদের মধ্যে বেশীরভাগেরই মুখে মাস্ক ছিলনা, ছিলনা সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই। রাস্তায় নেচে গেয়ে তারা মদ্যপানও করেছে।
বিরোধী দলীয় নেতা উই রিও ঘটনাটির তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘এই ঘটনার জন্য পর্তুগীজদের কাছে এই সরকার এবং পোর্তোর মেয়রকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। মহামারীরর সাথে লড়াই করে আমাদের প্রতিদিন টিকে থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে এই ধরনের ঘটনা সত্যিই মেনে নেয়া যায়না।’
যদিও পুর্তগালে প্রবেশের পূর্বে প্রতিটি দর্শককে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদান করতে হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের সবুজ তালিকায় থাকা পর্যটকরাই কেবল পর্তুগালে যেতে পেরেছেন এবং ইংল্যান্ডে ফিরে এসে তাদের কোন ধরনের কোয়ারেন্টাইনেরও প্রয়োজন হয়নি।
বছরের শুরুতে পর্তুগালের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করেছিল। ঘরের বাইরে গেলেই তাদের জন্য এখনো মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক। ঘরোয়া পরিবেশের বাইরে অথবা রেষ্ট্রুরেন্টে মধ্যপান নিষিদ্ধ রয়েছে। প্রায় একমাস যাবত ঘরোয়া দর্শকদের স্টেডিয়ামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইংলিশ সমর্থকরা ঠিকই ম্যাচ উপভোগের সুযোগ পেয়েছিলেন। শুধুমাত্র স্টেডিয়ামে প্রবেশের সুযোগই নয়, অনেক সমর্থক স্টেডিয়ামের বাইরেও জড়ো হয়েছিলেন।
পর্তুগালের ডানপন্থী সিডিএস পার্টি নেতা ফ্রান্সিসকো রদ্রিগুয়ের ডস সান্তোসও এই ঘটনায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ‘যেভাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল আয়োজিত হলো তা পর্তুগালের জন্য একটি খারাপ ইমেজ তৈরী করেছে। এজন্য এখানকার মানুষ স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে পড়লো।’
গত সপ্তাহে পুলিশের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিল ফাইনাল আয়োজনের আগে পোর্তা মাত্র দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছিল, যে কারনে তারা যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারেনি। ম্যাচের মাত্র এক সপ্তাহ আগে পর্তুগীজ সরকার কোভিড-১৯ আইন কিছুটা শিথীল করে। কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ফাইনালের পর করোনা পরিস্থিতি খারাপ হবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। পর্তুগালের উত্তরঞ্চলীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোববার জানিয়েছে যারাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পর যেকোন ধরনের উদযাপনের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে কোন ধরনের কোভিড-১৯ উপস্বর্গ দেখা গেলে আগামী ১৪ দিনের জন্য যেন তারা নিজ উদ্যোগে কোয়ারেন্টাইনে থাকে।
বাসস/নীহা/১৬০০/স্বব