বাসস দেশ-১৮ : কাঠমান্ডু ঘোষণা গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন

402

বাসস দেশ-১৮
বিমসটেক-ঘোষণা
কাঠমান্ডু ঘোষণা গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন
ঢাকা, ৩১ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : বিমসটেক নেতৃবৃন্দ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্যদিয়ে অভিন্ন শক্তিতে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও টেকসই করে গড়ে তোলার ঐকান্তিক অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আজ কাঠমান্ডু ঘোষণা গ্রহণ করেছেন।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসকেট)-এর চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে এ ঘোষণা গ্রহণ করা হয়।
কাঠমান্ডুর সোয়াল্টি হোটেলে দু’দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে আজকের সমাপনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাত-জাতি আঞ্চলিক সংস্থাটির রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিইন্ত-সহ সংস্থার অন্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনার কাছে বিমসটেকের চেয়ারম্যানশিপ হস্তান্তর করেন।
ঘোষণায় বিমসটেক নেতৃবৃন্দ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেতুবন্ধ হিসেবে বিমসটেকের অনন্য অবস্থান কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের উন্নত স্তরে উত্তরণের সংকল্প ব্যক্ত করে।
নেতৃবৃন্দ শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুস্থিতি অর্জনে সংস্থাকে একটি কার্যকর প্লাটফর্মে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সহযোগিতা সুসংহত ও জোরদার করতে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবন্ধ থাকতে সম্মত হন।
নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের জোরালো অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি এ লক্ষ্যে একটি সমন্বিত পদক্ষেপ উদ্ভাবনের আহবান জানান।
‘একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও টেকসই বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দিকে’ শীর্ষক যৌথ ঘোষণায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সমন্বিত পদক্ষেপে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূখন্ড থেকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধ, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী রিক্রুটমেন্ট ও চলাফেরা রোধ, উগ্রবাদ মোকাবেলা এবং সন্ত্রাসের উদ্দেশ্যে ইন্টারনেটের অপব্যবহার বন্ধ, সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
বিমসটেক নেতৃবৃন্দ দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই কেবল সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসবাদী সংস্থা ও নেটওয়ার্ককেই টার্গেট করবে না, বরং সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ, সহায়তা ও অর্থায়ন করে, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে আশ্রয় দেয় এবং ভুলভাবে তাদের গুণের প্রশংসা করে এমন রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত ও জবাবদিহিতার সম্মুখীন করবে।
নেতৃবৃন্দ ‘একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও টেকসই বঙ্গোপসাগর অঞ্চল গড়ে তুলতে বিমসটেককে আরো শক্তিশালী, কার্যকর ও ফলমুখী সংস্থায় পরিণত করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
নেতৃবৃন্দ বহুমাত্রিক যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, এটি এ অঞ্চলের অংশীদারিত্বমূলক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সংহতির অন্যতম চাবিকাঠি।
নেতৃবৃন্দ এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে অন্যতম প্রধান নিয়ামক উল্লেখ করে এর গুরুত্ব বিবেচনায় নেন।
নেতৃবৃন্দ বিমসটেকের আওতায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়াকে কার্যকরভাবে এগিয়ে নিতে সক্রিয় প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
বিমসটেক নেতৃবৃন্দ সংস্থার কার্যক্রম ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সমন্বয়, তদারকি ও সুগমে ঢাকাস্থ বিমসটেক সচিবালয়কে সক্ষম করে গড়ে তুলতে আর্থিক ও মানবিক সম্পদসহ এর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে সম্মত হন।
দু’দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে দেশে ফিরেছেন।
১৯৯৭ সালের জুন মাসে ব্যাংকক ঘোষণার মাধ্যমে বিমসটেক যাত্রা শুরু করে। ৫টি দক্ষিণ এশীয় (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকা) এবং ২টি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশ (মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড) নিয়ে এটি গঠিত হয়েছে।
বাসস/সবি/টিএ/অনু-এইচএন/২০৪০/আহা/এবিএইচ