বাসস দেশ-৫ : চট্টগ্রামে গ্রাম পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে

119

বাসস দেশ-৫
চট্টগ্রাম-কোভিড
চট্টগ্রামে গ্রাম পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে
চট্টগ্রাম, ২৯ মে, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে গ্রাম পর্যায়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৬ জন নতুন বাহক শনাক্ত হয়েছেন। এদের ৪৭ জনই গ্রামের বাসিন্দা। এ সময়ে মৃত্যু হয় গ্রামেরই এক করোনা রোগীর। সুস্থতার ছাড়পত্র পান ১৬৭ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের ৯১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ১১৬ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৬৯ জন ও নয় উপজেলার ৪৭ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ১৭ জন, ফটিকছড়িতে ১১ জন, বাঁশখালীতে ৫ জন, রাউজানে ৪ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৩ জন, সীতাকু-, মিরসরাই ও বোয়ালখালীতে ২ জন করে এবং আনোয়ারায় ১ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫৩ হাজার ১৬৯ জনে। এর মধ্যে শহরের ৪২ হাজার ৩৮৬ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ৭৮৩ জন।
গতকাল করোনায় এক জনের মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৬০৯ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৪৩৮ জন ও গ্রামের ১৭১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১৬৭ জন। এতে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭১৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৭০৭ জন ও ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩৪ হাজার ৮ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন, ছাড়পত্র নেন ৫৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ২৬৮ জন।
গ্রাম পর্যায়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে বলেন, ‘আমরা আরো কয়েকদিন পর্যবেক্ষণ করবো, তারপর আমাদের ফাইন্ডিংস জানাবো। আমাদের আপাততঃ উপলব্ধি হচ্ছে, ঈদের সময় বিপুল সংখ্যক লোকজন গ্রামের বাড়ি গেছেন। সেখানে আত্মীয়-স্বজনের ঘরে বেড়ানোর পর্ব সেরেছেন। এদের কারো কারো মাধ্যমে কিছু কিছু এলাকায় সংক্রমণ বাড়তে পারে।’
উল্লেখ্য, গতকালের ১ জনসহ চলতি মে মাসের ২৮ দিনে চট্টগ্রামে ৮৫ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৮ জন মারা যান ৮ মে। মৃত্যুশূন্য ছিল দুই দিন, একজন করে মারা যান গতকালসহ পাঁচদিন। গত এপ্রিল মাসে তিনদিন মৃত্যুশূন্য ছিল। পুরো মাসে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়। গতকালও আক্রান্তের চেয়ে আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ছিল বেশি। নতুন আইসোলেশনের চেয়ে করোনামুক্তির ছাড়পত্র গ্রহীতার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ২০৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৩ জনসহ ২৩ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১৭ ও গ্রামের ৩১ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৭০ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ টিসহ ২৩ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৮ জনের নমুনায় শহরের ৫ ও গ্রামের ২ টিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলে।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৯৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে শহরের একটি, মা ও শিশু হাসপাতালে ১৯ টি নমুনার মধ্যে শহরের ২ ও গ্রামের ৩ টি এবং মেডিকেল সেন্টারে ১৯ টি নমুনায় শহরের ৫ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামের ৭৯ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৪ টির পজিটিভ এবং বাকীগুলোর ফলাফল নেগেটিভ আসে।
নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে গতকাল কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১১ দশমিক ০৬ শতাংশ, চবিতে ২৪ দশমিক ৪৯, সিভাসু’তে ১৩ দশমিক ৫৩, চমেকে ২৫, শেভরনে ০ দশমিক ৫২, মা ও শিশু হাসপাতালে ২৬ দশমিক ৩১, মেডিকেল সেন্টারে ২৬ দশমিক ৩১ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়।
বাসস/জিই/কেএস/এমএবি/১৪৩৫/-জেহক