ভাসমান আবর্জনা অপসারণে মেশিন আনা হচ্ছে : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

210

ঢাকা, ২৭ মে, ২০২১ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, এডিস মশা ছাড়াও অন্যান্য প্রজাতির মশা নিধনে খাল এবং জলাশয়ে থাকা কচুরিপানা এবং ভাসমান ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতে জার্মানি থেকে অত্যাধুনিক মেশিন আনা হচ্ছে।
আজ অনলাইনে আয়োজিত এডিস মশা নিধন এবং ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সকল সিটি কর্পোরেশনের খাল ও জলাশয় থেকে কচুরিপানা এবং অন্যান্য ভাসমান পদার্থ পরিস্কার করে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস ও পানির প্রবাহ ঠিক রাখার লক্ষ্যে এই মেশিন আমদানি করা হচ্ছে । এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, চীন, জাপান, কোরিয়া এবং ব্রিটেনসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এই মেশিনগুলো চালু রয়েছে । সবগুলো দেশের মেশিন যাচাই-বাছাই করে জার্মানি থেকে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । এই মেশিন কচুরিপানাসহ ভাসমান পদার্থ এমনকি পানির এক মিটার নিচের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতেও সক্ষম ।
চলমান সময়টিকে এডিস মশার প্রজননের ঊর্বর সময় উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে জন্মে থাকে। তাই বাসাবাড়িতে কোথাও পানি জমিয়ে রাখা যাবেনা । নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ব্যাপারে অনেক সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে । এরপরও যারা এডিস মশার প্রজননে ভূমিকা রাখবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
তিনি জানান, এডিস মশা নিধনে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ঔষধ বিশেষ করে এডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইড পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে । এছাড়া, পর্যাপ্ত ফগিংমেশিন, প্রশিক্ষিত জনবলও প্রস্তুত আছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে অভিযান চালাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সিটি কর্পোরেশনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে । নগরবাসীকে মশার উপদ্রপ থেকে বাঁচাতে সব ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।
তিনি আরও বলেন, মানুষ সচেতন না হলে এবং খাল-জলাশয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করতে পারলে মশার প্রজনন বৃদ্ধি ঠেকানো সম্ভব হবে না । জনমানুষের অংশগ্রহণ অর্থাৎ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ যেকোন প্রতিকূলতা মোকাবেলা করা সম্ভব ।
মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় এবং সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাদের আওতাধীন অফিস এবং অন্যান্য অবকাঠামোতে যেন এডিস মশার লার্ভা না জন্মের সেদিকে নজর রাখতে হবে এবং নির্দেশনা প্রদান করতে হবে ।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র ক্যান্টমেন্ট বোর্ড, রেলওয়ে, সিভিল এভিয়েশন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে ডেঙ্গু মশা নিধনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী এডিস মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্তসমূহ এসব প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দিয়ে তা প্রতিপালন করার জন্য চিঠি দিতে বলেন এবং পরবর্তী মিটিংয়ে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে বলেন ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, সিটি কর্পোরেশনসহ সকল প্রতিষ্ঠান আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং এসব প্রতিষ্ঠান তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অন্যকোন প্রতিষ্ঠানের দ্বারা বাঁধা প্রাপ্ত হলে ব্যবস্থা নেয়া অধিকার রয়েছে । অনুরূপভাবে এডিস মশা নিধনে এবং ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে বাধাপ্রাপ্ত হলে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার সিটি কর্পোরেশনের আছে।
সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, খুলনা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক এবং ওয়াসার এমডি অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন ।