জলোচ্ছ্বাসে সাতক্ষীরার উপকূলে ১০ হাজার বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত

188

সাতক্ষীরা, ২৭ মে, ২০২১ (বাসস) : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে গোটা সাতক্ষীরা। উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটার ৪টি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের আড়াই লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ভেসে গেছে ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ৭ হাজার ৫৬০ টি মৎস্য ঘের। বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েক হাজার কাঁচা ঘর-বাড়ি। সুন্দরবনে নোনা পানিতে মিষ্টি পানির পুকুর তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। এতে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব। তবে কৃষি ক্ষেত্রে তেমন কোন ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, গত বুধবার ভরা পূর্ণিমায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদ-নদীগুলোতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকায় ৯৭ টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায় এবং ৩৪ টি স্থানে উপচে পড়া পানিতে চারটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের আড়াইলাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে বেশকিছু স্থানে বেঁড়িবাঁধ সংস্কার করতে সমর্থ হন। এদিকে ত্রাণ তৎপরতা চালানোর কথা বলেছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
আশাশুনি উপজেলার সুভদ্রাকাটি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, তার বাড়ি ডুবে গেছে। রান্নার কোন ব্যবস্থা নেই। বাইরে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জায়গা নেই।
শ্যমনগরের চাঁদনিমুখা গ্রামের ইবাদত হোসেন জানান, ক্লোজার বাঁধ ভেঙে তার ৫০ বিঘা জমির ঘের ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় বাঁধ উপচে ও বাঁধ ভেঙে ভসে গেছে ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ৭ হাজার ৫৬০ টি মৎস্য ঘের।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, প্রাথমিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে আরও একটু সময় লাগবে। তবে এ পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে ১০ হাজারেরও বেশি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আড়াইলাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
ত্রাণ তৎপরতার বিষয়ে জেলা প্রশাসক আরো জানান, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আড়াইলাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আশাশুনি ও শ্যামনগরে ৫০ টন. করে এবং তালা ও কালিগঞ্জে ৫ টন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।