চট্টগ্রামে করোনায় চলতি মাসে দ্বিতীয় মৃত্যুশূন্য দিন কাটলো

166

চট্টগ্রাম, ২৭ মে, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনায় বুধবার আরেকটি মৃত্যুশূন্য দিন কেটেছে। এর আগে ২১ মে চলতি মাসের একমাত্র মৃত্যুশূন্য দিন ছিল। পাশাপাশি সংক্রমণের সংখ্যা ও হার অপেক্ষাকৃত কমেছে। আক্রান্তের চেয়ে আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যাও বেশি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল বুধবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১ হাজার ৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ৯৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। নতুন বাহকদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৬ জন এবং এগারো উপজেলার ৪৩ জন। ফলে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ৫২ হাজার ৯৭১ জনে দাঁড়ালো। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪২ হাজার ২৫৭ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ৭১৪ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ৪৩ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ফটিকছড়িতে ৯ জন, রাউজান ও বাঁশখালীতে ৮ জন করে, হাটহাজারীতে ৭ জন, বোয়ালখালীতে ৩ জন, মিরসরাই ও আনোয়ারায় ২ জন করে এবং রাঙ্গুনিয়া, সীতাকু-, সন্দ্বীপ ও পটিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় এ অঞ্চলে কারো মৃত্যু হয়নি। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৬০৪ জনই রয়েছে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৩৫ জন ও গ্রামের ১৬৯ জন। সুস্থতার সনদ নিয়েছেন ১০৫ জন। ফলে জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৯ হাজার ৩৬২৭ জনে। এদের ৫ হাজার ৬৪৪ জন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ও ৩৩ হাজার ৭২৩ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়েছেন। আইসোলেশনে গতকাল যুক্ত হন ৩১ জন ও ছাড়পত্র নেন ৫০ জন। বর্তমানে ১ হাজার ৩৩০ জন আইসোলেশনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকাল ছিল চলতি মে মাসের দ্বিতীয় মৃত্যুশূন্য দিন। এর আগে ২৫ দিনে ৮০ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৮ জন মারা যান ৮ মে। একজন করে মারা যান চারদিন। গত এপ্রিল মাসে তিনদিন মৃত্যুশূন্য ছিল। পুরো মাসে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়। গতকালও আক্রান্তের চেয়ে আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা বেশি। সংক্রমণের হার তুলনামূলক কমেছে। নতুন আইসোলেশনের চেয়ে করোনামুক্তির ছাড়পত্র গ্রহীতা বেশি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে গ্রামের ২ জনসহ ১১ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৯১ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১১ ও গ্রামের ২৩ টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৬৮ জনের নমুনায় শহরের ১৮ ও গ্রামের ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৪ জনের নমুনার মধ্যে শহর ও গ্রামের ২ জন করে জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন।
বেসরকারি চার ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ২ জনসহ ১০ জন, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪১ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৫ জন এবং মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষিত ১৩ জনে শহরের ৩ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়। চট্টগ্রামের ১৯৩ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় গ্রামের ৬ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
তবে এদিন জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইম্পেরিয়ালে হাসপাতালে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ, চমেকে ১৬ দশমিক ৬৬, চবি’তে ১৭ দশমিক ৮০, সিভাসু’তে ১৫ দশমিক ৪৭, শেভরনে ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ, আগ্রাবাদ মা ও শিশুতে ১২ দশমিক ১৯, মেডিকেল সেন্টারে ২৩ দশমিক ০৭ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়।