বাসস দেশ-৬৯ : ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় বাগেরহাটে প্রস্তুতি : নিন্মাঞ্চল প্লাবিত

196

বাসস দেশ-৬৯
বাগেরহাট-ঘুর্ণিঝড়-প্লাবিত
ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় বাগেরহাটে প্রস্তুতি : নিন্মাঞ্চল প্লাবিত
বাগেরহাট, ২৫ মে, ২০২১ (বাসস) : উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সুন্দরবনের দুবলারচরসহ শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলার নিন্মাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুরের পর বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে। থেমে-থেমে বৃষ্টির সাথে দমকা হওয়া অব্যাহত রয়েছে। বেড়েছে বলেশ^র, পানগুছি, ভৈরব, পশুর নদীর পানির উচ্চতা। দুপুরের পর জোয়ারের ফলে উপকূলের এসকল নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা ও বাগেরহাটের নিচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার শত-শত বাড়ি-ঘর। প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাট শহরের রাস্তাঘাট, ভেসে গেছে মৎস্য খামার। মঙ্গবার দুপুরের পর তলিয়ে গেছে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের বাজার। মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কসহ নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। মোংলা বন্দরে অবস্থানরত জাহাজের পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দাকার রিজাউল করিম জানান। ইতিমধ্যে জেলায় ৩৪৪ ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ৬২৯ স্কুল কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ঘূণিঝড়ের সময় করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রায় ৩ লাখ লোকের থাকাসহ গবাদীপশু রাখা যাবে। একই সাথে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্কসহ পর্যাপ্ত পানি। এই ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, নৌবাহিনী কোস্টগার্ডসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, সব মিলিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। একই সাথে নগদ টাকাসহ ২৮ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতি উপজেলায় শিশুখাদ্য ও পশুখাদ্য কেনার জন্য আলাদা ভাবে পাঠানো হয়েছে ১ লাখ টাকা করে।
ঘুর্ণিঝড় পরবর্তি উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্ট, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশ সদস্যরা সব ধরনের পর্যাপ্ত যানবাহন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৮৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে এক থেকে দেড় ফুট পানি উঠেছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষতির কবল থেকে রক্ষায় সুন্দরবনের গহীন বনের ৮টি টহল ফাড়ি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওইসব বন কার্যালয়ে কর্মরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম জানান, বাগেরহাট উপকূলীয় জেলা হওয়ায় ঝড়-জলোচ্ছ্াসে এ জেলার মানুষ একটু বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। তাই আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলার উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জসহ জেলায় ৩৪৪ ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ৬২৯ স্কুল কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনে আরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনগুলোও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পানি ও আলোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আসন্ন ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/২৩০৩/কেজিএ